Skip to main content

বন্ধুত্ব

বন্ধু শব্দটা মূলত অনেক কমন!  শৈশব থেকেই এই শব্দের যাত্রা শুরু হলেও কৈশোরকাল থেকে বন্ধু শব্দটা উপলব্ধি করা যায়! আর সত্যি বলতে এয়ারটেলের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেই আসল বন্ধুত্ব এর মর্ম বুঝা যায়! :p


কমবেশি বন্ধু কিন্তু সবারই থাকে।  তবে সব বন্ধু এক রকম না কিংবা একজাতের না... খুব অল্প কিছু বন্ধু থাকে, যারা একদমই অন্যরকম !! সবার থেকে ভিন্ন!অন্য বন্ধুরা যখন বৃষ্টি হইলে তোমার জন্য ছাতা নিয়ে দৌড়ায়ে আসবে ... "এই নে " কিংবা এক ছাতার নিচে থেকে একসাথে যাবে! অন্যরকম বন্ধুগুলা তখন উল্টা তোমার মাথার ছাতাটা কেড়ে নিয়ে বন্ধ করে দিয়ে বলবেঃ"ছাতা কি কামে লাগে ?? চল ভিজি !!"বন্ধুর পাল্লায় পড়ে বৃষ্টিতে ভিজে তোমার জ্বর হবে ...পরিণতি ভালো হবে না!

তুমি যখন কাতর গলায় বলবা, তোমার জ্বর আসছে, শুধুমাত্র তোর কারণে!.. তখন ঐ অসাধারণ বন্ধু তোমারে বলবেঃ(হাসতে হাসতে)"তো ?? আজকে জ্বর হইছে, কালকে নিউমোনিয়া হবে !!"

"কি বলতেছিস এগুলা ??তুই আমারে বোদোয়া দিতেসিস!!"

"হুম ... আমি দোয়া করি তোর নিউমোনিয়া হোক !!"
"কেন ? তাতে তোর কি লাভ?"

"তোর নিউমোনিয়া হইলে আমি তোরে হাসপাতালে ভর্তি করাবো।""তারপর? হঠাত এত্তো ভালোকাজ!"

"তারপর তোর অসুস্থতার কথা বইলা ওষুধ কিনার জন্য টাকা তুলুম সবার মানে বন্ধুদের কাছ থেইকা ... সেই টাকা দিয়া ওষুধ তো কিনমুই না বরং একটা স্যালাইন ও না, উল্টা একদিন বিকালে রেস্টুরেন্ট এ গিয়ে ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া দিবো ...খাবার খাইয়া ঢেকুর তুলতে তুলতে তোর জন্য খাস দিলে দোয়া করবো ... তুই ৭ দিন ভুইগা আমার দোয়ার জোরে এমনিই সুস্থ হইয়া যাবি ...ইহা আমার বিশ্বাস! তাছাড়া এমনিতেও তুই একদিন না একদিন সুস্থ হবি! তারপর আমারে আবার খাওয়াবি !! খাওয়া-খাওয়া ♥"


আবার এমন সময়ও আছে যে এই বন্ধুগুলো তখনও তোমার পাশে থাকবে যেমন :পরীক্ষার হল ♥তুমি যতই খারাপ অথবা বাজে অবস্থায় থাকো না কেন, পরীক্ষার সময় বিপদে বন্ধুদের সাহায্য আগে দরকার হয়! এবং তারাও কখনো তোমাকে না করবে না! নিজে পাশ করার পাশাপাশি তোমাকেও যেভাবে হোক পাশ করাবেই!! ♥


এই বন্ধুগুলা এমনই ... তোমার প্রেমিকা যখন তোমাকে রেখে চলে যাবে, তোমার তীব্র বিষণ্ন মূহুর্তে দুখের সময়েও এদের কোন মায়া দয়া হবে না বরং এরা তোমার করুণ মুখের দিকে তাকিয়ে এরা দন্ত বিকশিত হাসি দিয়ে বলবেঃ"মামা, তুই ছ্যাঁক খাইছোস ... পার্টি দে !!ট্রিট দে! ডেলিসিয়াসে অফার চলে! ঐখানেই চল!" এরপর যদি কোনো প্রেমের বন্ধনে কেউ আবদ্ধ হও তখনও এই বন্ধুরাই বলবে যে --- "কি রে কয় নম্বর এইটা?ট্রিট কবে হবে? ভাবিরে দেখাবি না? " আবার এইসকল বন্ধুরাই বিনা কারণে তোমার নিকট এমনি এমনি খাইতে চাইবে।সত্যি বলতে এদের সাথে ঘুরতেই তোমার ভালো লাগবে!


হাসি-ফাজলামির মাধ্যমে বন্ধুত্ব এর এই মধুর সম্পর্ক ধীরে ধীরে বেড়ে উঠে! তুমি যখন তোমার বাবা-মা এর সাথে ফোনে কথা বলো এবং ঠিক ঐ সময়েই তোমার আশেপাশের বন্ধুরা যখন এমনি এমনি তোমাকে বলে --- "দোস্ত সিগারেটটা দে তো! সাদিয়া কেমন আছে রে?"এই ধরণের অশ্লীল কথা বলে তোমাকে ফাসিয়ে দিতে তাদের একটুও মনে দ্বিধাবোধ হয় না, উলটা হাসি-তামাশায় মেতে উঠে সকলে!


সুখ-দুখের মুহুর্ত, পড়াশুনা, প্রেম সকল কিছুতেই কাছের কিছু বন্ধুরাই জানে, তারাই সাহায্য করে এবং তারাই পাশে দাঁড়ায়!তোমার যতই বেশি ফ্রেন্ড থাকুক না কেন দিনশেষে ঐসকল বন্ধুরাই আসবে!তোমার খবর নিবে! 
এই অসাধারণ বন্ধুগুলার উপর প্রতিনিয়ত তোমার প্রচন্ড রাগ হবে, ভালোই লাগবে না কাউকে কিন্তু তুমি এদের থেকে দূরে যেতে পারবা না কিংবা এদের avoid করতে পারবা না। একদিন তুমি টের পাবা, এদের এইসব অসহ্য রকমের জ্বালাতন এর প্রতি তুমি আসক্ত হয়ে গেছো ... আসলে তোমার পচানি খাইতেই ভালো লাগে, পচানি শুনার জন্য তুমি পচানিমার্কা কাজ করবা! তোমার খুব ইচ্ছা করবে, এরা এসে তোমাকে জ্বালাময়ী কথাবার্তা বলে একটু খেপাক ... তোমার রাগতে ইচ্ছা করে, ওদের সাথে হাসতে ইচ্ছা করবে,  রেগেমেগে চিৎকার করে বলতে ইচ্ছা করেঃ"হারামি রে !!"
জীবনে তোমার বন্ধুর অভাব হবে না ... বন্ধু সবাই হইতে পারে ... কিন্তু "হারামি" সবাই হইতে পারে না ... এই ডাকটা খুব অল্প কিছু অসাধারণ বন্ধুর জন্য বরাদ্দ থাকে !!আর যাই করো, "হারামি" দের হারিয়ে ফেলো না ... ভুলেও হারিয়ে ফেলো না !!"কেননা এইসকল "হারামি" রাই পাগ্লামির মাধ্যমে জীবনকে হাসিময় এবং পরিপূর্ণ করে তুলে ♥সকল বন্ধুকে জানাই বন্ধু দিবসের শুভেচ্ছা এবং ভালবাসা ♥

হারামিপানা চালিয়ে যেতে থাকো!  ♥

Comments

Popular posts from this blog

একটি মধ্যবিত্ত ভালবাসার গল্প

কিছু গল্প সবসময় এক হয় না!  পার্থক্য, ভেদা-ভেদ সবকিছুতেই থাকে।ঠিক তেমনি ভালবাসার গল্পগুলোতেও কিছু মিল-অমিল পাওয়া যায়!আর আজকে ঠিক তেমনি অতি সাধারণ একটা গল্প তুলে ধরতে যাচ্ছি! 'মধ্যবিত্ত' শব্দটা হয়তো সকলেরই অনেক পরিচিত। মধ্যবিত্ত মানুষগুলো ধনী-গরীব হতে সম্পূর্ণ ভিন্ন।তাদের চিন্তা-ভাবনা,চলাফেরা এমনকি জীবনযাপনও ভিন্ন। আর মধ্যবিত্ত ভালবাসা এর মানে বুঝাই যাচ্ছে এর মধ্যেও কিছুটা ভিন্নতা আছে! ♥ কলেজ পড়ুয়া মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলের সাথে প্রেম করা বর্তমান যুগের মেয়ের জন্য তুলনামুলক প্যারাময়! কেননা এইসকল ছেলের থাকে না টাকা-পয়সা,মোটরসাইকেল আর কত কি!  কিন্তু মেয়েরা ভুলে যায়, অন্যদের মতো ঐ ছেলেদেরও সুন্দর একটা মন আছে, তারাও ভালবাসতে জানে!  টাকা-পয়সা বাইক এইসব শো অফ করাই কি ভালবাসা?? প্রেমিকার জন্মদিনে বড় অনুষ্ঠান করা, এ্যানিভার্সারি পালন করা আর আজাইরা টাকা খরচও কি ভালবাসা?? :/ ভালবাসা এমন হতে পারে না........ ১০০ টাকায় রিক্সা ভাড়া করে কিছুদূর ঘুরা! পাশাপাশি বসে একসাথে ফুচকা খাওয়া!♥ জন্মদিনে/অথবা অন্যকিছুতে টিফিনের এবং যাতায়াতের টাকা বাঁচিয়ে প্রিয় মানুষের জন্য ছোট্ট কিছু করা ...

তুমি, আমি আর সংসার (খুনসুটে অতীত)

  ২৩ শে জুন : শুভ জন্মদিন,ফায়াজ! :উম্ম, আপনার তাহলে মনে আছে?! ধন্যবাদ! : হ্যাঁ মনে কেনো থাকবে না!  স্বামীর জন্মদিন মনে রাখা একজন স্ত্রীর দায়িত্ব! শুনো টেবিলে ব্রেক-ফাস্ট রেডি করা আছে আর মা নানুর সাথে দেখা করতে গিয়েছে! বাসা তালা দিয়ে যেয়ো, আমাকে জলদি অফিসে যেতে হবে! : আচ্ছা একটু অপেক্ষা করেন, আমি নামিয়ে দিয়ে আসি! : নাহ নাহ! আপনি খেয়ে বের হয়েন এইটুকুই! এবং শুভ জন্মদিন!  বেশি প্রেসার নিয়েন না জন্মদিনে হাহাহাহা!  ( ফারিন অফিসের জন্য বের হলো) [বিয়ের ৩-৪ মাসের মধ্যে মেয়েটা আমাকে ভালোই চিনে ফেলেছে, যাক ভালো! তিনি ঠিক থাকলেই হলো! আর আজকের এই দিনে আর কি বা চেতে পারি! বছরের ঠিক মাঝে জন্মদিন, ব্যাপারটা ভালোই কিন্তু আজও কেউ কখনো..  উম্ম থাক! এই বুড়া বয়সে এসে এইসব ভাবা ঠিক না! ] বাথরুমে গিয়ে দেখি আয়নায় একটা স্টিকি নোট (শুভ জন্মদিন ডাক্তার সাহেব, হাসি মুখে ব্রাশ করে নাস্তার টেবিলে বসে যেয়েন, ভুলে যেয়েন না কিন্তু) [আমার বারবার নাস্তা করতে ভুলে যাওয়া এই ব্যাপারটা একবারে মাথায় নিয়ে নিয়েছে! খুবই অল্প সময়ের মধ্যেই একটা মজবুত বন্ধন কাজ করছে দুজনের মাঝে ব্যাপারটা মোটেও খা...