Skip to main content

একটি মধ্যবিত্ত ভালবাসার গল্প

কিছু গল্প সবসময় এক হয় না!  পার্থক্য, ভেদা-ভেদ সবকিছুতেই থাকে।ঠিক তেমনি ভালবাসার গল্পগুলোতেও কিছু মিল-অমিল পাওয়া যায়!আর আজকে ঠিক তেমনি অতি সাধারণ একটা গল্প তুলে ধরতে যাচ্ছি!

'মধ্যবিত্ত' শব্দটা হয়তো সকলেরই অনেক পরিচিত। মধ্যবিত্ত মানুষগুলো ধনী-গরীব হতে সম্পূর্ণ ভিন্ন।তাদের চিন্তা-ভাবনা,চলাফেরা এমনকি জীবনযাপনও ভিন্ন। আর মধ্যবিত্ত ভালবাসা এর মানে বুঝাই যাচ্ছে এর মধ্যেও কিছুটা ভিন্নতা আছে! ♥
কলেজ পড়ুয়া মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলের সাথে প্রেম করা বর্তমান যুগের মেয়ের জন্য তুলনামুলক প্যারাময়! কেননা এইসকল ছেলের থাকে না টাকা-পয়সা,মোটরসাইকেল আর কত কি!  কিন্তু মেয়েরা ভুলে যায়, অন্যদের মতো ঐ ছেলেদেরও সুন্দর একটা মন আছে, তারাও ভালবাসতে জানে!  টাকা-পয়সা বাইক এইসব শো অফ করাই কি ভালবাসা?? প্রেমিকার জন্মদিনে বড় অনুষ্ঠান করা, এ্যানিভার্সারি পালন করা আর আজাইরা টাকা খরচও কি ভালবাসা?? :/

ভালবাসা এমন হতে পারে না........ ১০০ টাকায় রিক্সা ভাড়া করে কিছুদূর ঘুরা! পাশাপাশি বসে একসাথে ফুচকা খাওয়া!♥ জন্মদিনে/অথবা অন্যকিছুতে টিফিনের এবং যাতায়াতের টাকা বাঁচিয়ে প্রিয় মানুষের জন্য ছোট্ট কিছু করা ♥
মধ্যবিত্ত ভালবাসাগুলো এমনই হয়! 

ঠিক একইভাবে মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়েদেরও প্রেমটা কিছুটা এমনই!  তারাও অতি সাধারণভাবে নিজেদের ভালবাসা অনুভব করতে চায়, তাদের চাওয়া-পাওয়া বেশি কিছু নয়!  সর্বোচ্চ ১০ টাকার গোলাপ তা না হলে ২০ টাকার গাজরা আর বেশি কিছু হলে একসাথে ভেলপুরি খাওয়া ♥
মিষ্টি-মধুর এই প্রেমগুলো কেন জানি আজ বিলীন হয়ে গেসে! টাকা নেই বলে পাশে কেউ নেই, নিজেকে সবার সাথে মিলিয়ে নিতে পারে না বলে বন্ধুত্ব থেকেও তারা আলাদা হয়ে যায় তবে কে কি জানে তাদের মধ্যবিত্ত জীবনের কথা!! 

"মাঝরাতে দুঃস্বপ্ন দেখে হুট করে ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার পর অবচেতন মনে তুমি চারপাশে হাতড়ে যে মানুষটাকে খুঁজতে থাকো, কিন্তু খুঁজে পাও না ... সেই মানুষটা আসলে তোমার মাথার ভেতরটায় রাজত্ব করে, বুকের ভেতরে চুপিচুপি বাস করে ... তাকেই তুমি ভালোবাসো ... হু, তাকেই তুমি মন থেকে ভালোবাসো !!"

ইহা একটি মধ্যবিত্ত ভালবাসার ভাবনা ♥
কাছের প্রিয় মানুষগুলোকে এরা এভাবেই অনুভব করে,নিজেদের স্বপ্ন এর মাঝে তাদের লালন করে! চিন্তা-ভাবনায় কেবল স্থান পায় তাদের প্রিয় ভালবাসার মানুষ! 

বিকেলে ল্যাব শেষ হওয়া মাত্রই কাঁধে ভারী ব্যাগটা ঝুলিয়েই বেশ তাড়াহুড়ো করে ছেলেটা দোকানটার সামনে আসে ... মেয়েটা একবার ঘড়ির দিকে তাকায়,তারপর চোখ কটমট করে ছেলেটার দিকে তাকানোর আগেই একটা হাসি দিয়ে ফেলে সে ... সব রাগ একদম পানি তখনই !! শুরুটা এমন হয়ে সব ভার্সিটির প্রেমের গল্পে আর ছেলে-মেয়ে দুজনই মধ্যবিত্ত পরিবারের হলে সেই ভালবাসা ভিন্ন হয় সকল ভালবাসা থেকে!

দুপুরে কেউ কিছু খায় নাই ... ছেলেটার মানিব্যাগের ২ টা পকেটই ফাঁকা ... এই মাসে বাসা থেকে কোন টাকা পাঠানো হয় নাই তাকে,নিজের জমানো টাকার প্রায় সবটুকুই গেলো সেমিস্টারের ফি দিতে!! টিউশনির টাকা এখনো হাতে আসে নাই!
অপরাধী অপরাধী চোখে ছেলেটা মেয়েটার চোখের দিকে তাকায় ... তখন সে মেয়েটার চোখে এক ধরণের ভরসা দেখতে পায় !!এই ভরসা কেবলমাত্র নিষ্পাপ প্রেমের যা তুলনাহীন!
মেয়েটার ছোট্ট পার্সে শুধু একটা একশো টাকার নোট ছিলো ... ছেলেটা বলে, "আমার ক্ষুধা নেই" ... একটা বার্গারের অর্ডার দেয়া হয় মেয়েটার জন্য!ট্রে তে করে ওয়েটার একটা বার্গার নিয়ে আসে ... একটুখানি খাওয়ার পর অন্যমনস্ক ছেলেটার দিকে তাকিয়ে মেয়েটা বলেঃ
"হা করো !! এখন এতো ঢং করতে হবে না! একটু খেয়ে নাও! "

মধ্যবিত্ত ভালোবাসায় মাঝে মাঝে মানিব্যাগ আর পার্সটায় টাকার অভাব থাকে ... পেটের ভেতর খাবারের অভাব থাকে ... কিন্তু বুকের ভেতরটার ভালোবাসার কোন অভাব থাকে না !!
আর এভাবেই প্রতিনিয়ত চলতে থাকে ছোট্ট মিষ্টি মধুর ভালবাসার গল্প!  এই ভালবাসায় সবকিছুর অভাব থাকলেও ভালবাসা,আবেগ এবং বিশ্বাস এর অভাব থাকে না! এর জন্যই এসকল ভালবাসা ভিন্ন সবকিছু থেকে এবং এটি মজবুতও বটে! 

তবে সত্যি বলতে বর্তমানে এসকল প্রেম তেমন দেখা যায় না!!  সবাই আশা করে বড় কিছু! অল্পতে কেউই সন্তুষ্ট নয়! আর বেশিরভাগ ছেলে-মেয়েই একাকী থাকে কেবলমাত্র তাদের কাছে অভাব শুধু প্রাচুর্য আর টাকা!
তবে 

যে ভালোবাসার ভেতর অভাব থাকে, সেই ভালোবাসায় ভালোবাসার কোন অভাব থাকে না ... সত্যিই কোন অভাব থাকে না !!"
এবং  ইহাই সত্য কেননা প্রতিটি মধ্যবিত্ত ভালবাসার গল্পে দুখ-কষ্ট থাকলেও তাতে কিছু ভালবাসাময় মূহুর্ত আছে যা অন্য গল্পে পাওয়া যায় না ♥

Comments

Popular posts from this blog

তুমি, আমি আর সংসার (খুনসুটে অতীত)

  ২৩ শে জুন : শুভ জন্মদিন,ফায়াজ! :উম্ম, আপনার তাহলে মনে আছে?! ধন্যবাদ! : হ্যাঁ মনে কেনো থাকবে না!  স্বামীর জন্মদিন মনে রাখা একজন স্ত্রীর দায়িত্ব! শুনো টেবিলে ব্রেক-ফাস্ট রেডি করা আছে আর মা নানুর সাথে দেখা করতে গিয়েছে! বাসা তালা দিয়ে যেয়ো, আমাকে জলদি অফিসে যেতে হবে! : আচ্ছা একটু অপেক্ষা করেন, আমি নামিয়ে দিয়ে আসি! : নাহ নাহ! আপনি খেয়ে বের হয়েন এইটুকুই! এবং শুভ জন্মদিন!  বেশি প্রেসার নিয়েন না জন্মদিনে হাহাহাহা!  ( ফারিন অফিসের জন্য বের হলো) [বিয়ের ৩-৪ মাসের মধ্যে মেয়েটা আমাকে ভালোই চিনে ফেলেছে, যাক ভালো! তিনি ঠিক থাকলেই হলো! আর আজকের এই দিনে আর কি বা চেতে পারি! বছরের ঠিক মাঝে জন্মদিন, ব্যাপারটা ভালোই কিন্তু আজও কেউ কখনো..  উম্ম থাক! এই বুড়া বয়সে এসে এইসব ভাবা ঠিক না! ] বাথরুমে গিয়ে দেখি আয়নায় একটা স্টিকি নোট (শুভ জন্মদিন ডাক্তার সাহেব, হাসি মুখে ব্রাশ করে নাস্তার টেবিলে বসে যেয়েন, ভুলে যেয়েন না কিন্তু) [আমার বারবার নাস্তা করতে ভুলে যাওয়া এই ব্যাপারটা একবারে মাথায় নিয়ে নিয়েছে! খুবই অল্প সময়ের মধ্যেই একটা মজবুত বন্ধন কাজ করছে দুজনের মাঝে ব্যাপারটা মোটেও খা...

বন্ধুত্ব

বন্ধু শব্দটা মূলত অনেক কমন!  শৈশব থেকেই এই শব্দের যাত্রা শুরু হলেও কৈশোরকাল থেকে বন্ধু শব্দটা উপলব্ধি করা যায়! আর সত্যি বলতে এয়ারটেলের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেই আসল বন্ধুত্ব এর মর্ম বুঝা যায়! :p কমবেশি বন্ধু কিন্তু সবারই থাকে।  তবে সব বন্ধু এক রকম না কিংবা একজাতের না. .. খুব অল্প কিছু বন্ধু থাকে, যারা একদমই অন্যরকম !! সবার থেকে ভিন্ন! অন্য বন্ধুরা যখন বৃষ্টি হইলে তোমার জন্য ছাতা নিয়ে দৌড়ায়ে আসবে ... "এই নে " কিংবা এক ছাতার নিচে থেকে একসাথে যাবে! অন্যরকম বন্ধুগুলা তখন উল্টা তোমার মাথার ছাতাটা কেড়ে নিয়ে বন্ধ করে দিয়ে বলবেঃ "ছাতা কি কামে লাগে ?? চল ভিজি !!" বন্ধুর পাল্লায় পড়ে বৃষ্টিতে ভিজে তোমার জ্বর হবে ...পরিণতি ভালো হবে না! তুমি যখন কাতর গলায় বলবা, তোমার জ্বর আসছে, শুধুমাত্র তোর কারণে!.. তখন ঐ অসাধারণ বন্ধু তোমারে বলবেঃ(হাসতে হাসতে) "তো ?? আজকে জ্বর হইছে, কালকে নিউমোনিয়া হবে !!" "কি বলতেছিস এগুলা ??তুই আমারে বোদোয়া দিতেসিস!!" "হুম ... আমি দোয়া করি তোর নিউমোনিয়া হোক !!" "কেন ? তাতে তোর কি লাভ?" "তোর নিউমোনিয়া হইলে...