Skip to main content

সেকেন্ড টাইমার (পর্ব-০২- দ্যা গ্র্যান্ড সেলিব্রেশন )




সকাল ৮টায় এসেই ১০০ টা বৃত্ত ভরাট করলাম, মাঝে হালকা ব্রেক পাওয়াতে নিচে গিয়ে একটু চা খেয়ে উপরে উঠলাম! ফার্মগেটের সকালটা কেন জানি একটু অন্যরকম, তাও আবার ডিসেম্বর মাস! টানা ২ ঘন্টার লেকচার শেষে আবারো বৃত্ত ভরাট করে বের হওয়ার সাথে সাথে আমার কলেজের এক ক্লাসমেটের সাথে দেখা! কুশল বিনিময় শেষ করে, সে জানালো আজকে থেকে তাদের গ্র‍্যান্ড সেলিব্রেশন প্রোগ্রামের নাচ-গানের রিয়ারসেল! ছেলেটা ভালোই ব্রিলিয়ান্ট ছিলো, সলিমুল্লাহ মেডিকেলে নাম এসেছে! সাথে আরো অনেকের সাথেই দেখা হলো, সবার সাথে কুশল বিনিময় শেষ করে বের হলাম কোচিং থেকে! ফার্মগেট এখন এক ব্যস্ত নগরী, সকাল থেকেই ব্যাপারটা এমন থাকে কিন্তু ১০ টার পর মানুষের ভীড় একটু বেশি বেড়ে যায়! কোনোমতে বাসে উঠে, কানে হেডফোন দিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে বের হলাম!

যতই মোটিভেশন নেও কিংবা হও না কেন, সেটা ১/২ দিন পর হাওয়া হয়ে যায়, কেনো জানি বেশিদিন সেটা থাকতে পারে না! এটার উত্তর জানাটা জরুরী। আমার মনে হয় এজন্যই বারবার ভাইয়া-আপুরা আমাদের মোটিভেট করতেই থাকে! একই পড়াশুনা বার বার করা যেমন ধৈর্য্যর ব্যাপার, ঠিক তেমনি আশেপাশের পরিবেশ দেখে নিজেকে সামলে রাখা আরো মুশকিল ব্যাপার।
প্রতিদিনের রুটিনটা এমনই যাচ্ছে! কয়েকদিন পর এমন দাড়ালো যে, এক রুমে কিছু শিক্ষার্থী তাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য আবার চেষ্টা চালাচ্ছে,ঠিক তার পাশের রুমেই আরেক দল শিক্ষার্থী তাদের সাফল্যের উল্লাসে মেতে উঠছে! কেউ জয়ী আর কেউ পরাজয়ী! এটাই বাস্তবতা!

একদিন কোচিং শেষে,
: আরেহ! কি অবস্থা মামা?
:এইতো আছি রে! তোর কি খবর? শুনলাম সিলেট মেডিকেল হয়েছে তোর! অভিনন্দন!
:হ্যা এইতো! ভর্তি শেষ করে আসলাম কালকে আর আজকে এই প্রোগ্রামে নাম দিলাম! তুই আমার কোচিং করতেসিস?
:হ্যা! আরেকবার করে দেখি কপাল কি আছে!
:আচ্ছা আচ্ছা! দেখলি কি হলো?! এতো বৃত্তি,A+ দিয়ে কি হলো, চান্স তো হলো না! আর আমার একবারেই হয়ে গেলো, থাক চেষ্টা চালা! যাই আমি ডাকতেসে আমাকে!

এভাবে কথাশুনানোর মানুষগুলো দিয়ে চারপাশ ভর্তি ছিলো! হালকা ব্রেকে ফেইসবুকে ঢুকলে সবার স্ট্যাটাস দেখতে ভালোই লাগতো, কিন্তু একটা সময় যে এটা নিজেকে এতো পীড়া দিবে তা ভাবি না! নরমাল চোখে দেখার চেষ্টা করলেও কিছু কিছু মানুষের কথা আপনাকে ব্যাথা দিবেই!

একদিন রাতে কোচিং-এর মার্ক্সস আসার পর অনেক মন খারাপ ছিলো, ঐদিকে ঐদিন ছিলো গ্র‍্যান্ড সেলিব্রেশন প্রোগ্রাম! সবার এ্যাপ্রোন পড়া ছবি দেখে ভালোই লাগছিলো, হাতে নতুন বই, হাজারো হাসিখুশির ছবি এবং সাফল্য! সবাই এইরকম মুহুর্তগুলো বারবার চায়! কিন্তু তা সবার কপালে জোটে না! ফোনে সকালের ক্লাসের মেসেজ আসলো, বসে পড়লাম টেবিলে পড়তে....
মাঝরাতে হঠাত আম্মু এলো রুমে, এসে কিছুক্ষণ মাথায় হাতে বুলিতে, ফু দিয়ে দিলো, যাওয়ার আগে বললো -- " টেনশন নিস না বাবা,ইনশাআল্লাহ এইবার তোর হয়েই যাবে! আল্লাহ ভরসা "

to be continued!

( আমার এই লেখা শুধুমাত্র তাদের জন্যই যাদের গল্প সবার কাছে পৌছায় না, যারা নিজেদের ব্যর্থতাকে সাথে নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। কষ্ট সবাই করে, চেষ্টা সবাই করে কিন্তু সবাই তো দিনশেষে সফল হয় না! আমার এই লেখা তাদের জন্য। উৎসর্গ তোমাদের জন্য♥)

( বিঃদ্রঃ-কাউকে দুঃখ কিংবা কষ্ট দেওয়ার জন্য এই লেখা হয়নি।)

Comments

Popular posts from this blog

একটি মধ্যবিত্ত ভালবাসার গল্প

কিছু গল্প সবসময় এক হয় না!  পার্থক্য, ভেদা-ভেদ সবকিছুতেই থাকে।ঠিক তেমনি ভালবাসার গল্পগুলোতেও কিছু মিল-অমিল পাওয়া যায়!আর আজকে ঠিক তেমনি অতি সাধারণ একটা গল্প তুলে ধরতে যাচ্ছি! 'মধ্যবিত্ত' শব্দটা হয়তো সকলেরই অনেক পরিচিত। মধ্যবিত্ত মানুষগুলো ধনী-গরীব হতে সম্পূর্ণ ভিন্ন।তাদের চিন্তা-ভাবনা,চলাফেরা এমনকি জীবনযাপনও ভিন্ন। আর মধ্যবিত্ত ভালবাসা এর মানে বুঝাই যাচ্ছে এর মধ্যেও কিছুটা ভিন্নতা আছে! ♥ কলেজ পড়ুয়া মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলের সাথে প্রেম করা বর্তমান যুগের মেয়ের জন্য তুলনামুলক প্যারাময়! কেননা এইসকল ছেলের থাকে না টাকা-পয়সা,মোটরসাইকেল আর কত কি!  কিন্তু মেয়েরা ভুলে যায়, অন্যদের মতো ঐ ছেলেদেরও সুন্দর একটা মন আছে, তারাও ভালবাসতে জানে!  টাকা-পয়সা বাইক এইসব শো অফ করাই কি ভালবাসা?? প্রেমিকার জন্মদিনে বড় অনুষ্ঠান করা, এ্যানিভার্সারি পালন করা আর আজাইরা টাকা খরচও কি ভালবাসা?? :/ ভালবাসা এমন হতে পারে না........ ১০০ টাকায় রিক্সা ভাড়া করে কিছুদূর ঘুরা! পাশাপাশি বসে একসাথে ফুচকা খাওয়া!♥ জন্মদিনে/অথবা অন্যকিছুতে টিফিনের এবং যাতায়াতের টাকা বাঁচিয়ে প্রিয় মানুষের জন্য ছোট্ট কিছু করা ...

তুমি, আমি আর সংসার (খুনসুটে অতীত)

  ২৩ শে জুন : শুভ জন্মদিন,ফায়াজ! :উম্ম, আপনার তাহলে মনে আছে?! ধন্যবাদ! : হ্যাঁ মনে কেনো থাকবে না!  স্বামীর জন্মদিন মনে রাখা একজন স্ত্রীর দায়িত্ব! শুনো টেবিলে ব্রেক-ফাস্ট রেডি করা আছে আর মা নানুর সাথে দেখা করতে গিয়েছে! বাসা তালা দিয়ে যেয়ো, আমাকে জলদি অফিসে যেতে হবে! : আচ্ছা একটু অপেক্ষা করেন, আমি নামিয়ে দিয়ে আসি! : নাহ নাহ! আপনি খেয়ে বের হয়েন এইটুকুই! এবং শুভ জন্মদিন!  বেশি প্রেসার নিয়েন না জন্মদিনে হাহাহাহা!  ( ফারিন অফিসের জন্য বের হলো) [বিয়ের ৩-৪ মাসের মধ্যে মেয়েটা আমাকে ভালোই চিনে ফেলেছে, যাক ভালো! তিনি ঠিক থাকলেই হলো! আর আজকের এই দিনে আর কি বা চেতে পারি! বছরের ঠিক মাঝে জন্মদিন, ব্যাপারটা ভালোই কিন্তু আজও কেউ কখনো..  উম্ম থাক! এই বুড়া বয়সে এসে এইসব ভাবা ঠিক না! ] বাথরুমে গিয়ে দেখি আয়নায় একটা স্টিকি নোট (শুভ জন্মদিন ডাক্তার সাহেব, হাসি মুখে ব্রাশ করে নাস্তার টেবিলে বসে যেয়েন, ভুলে যেয়েন না কিন্তু) [আমার বারবার নাস্তা করতে ভুলে যাওয়া এই ব্যাপারটা একবারে মাথায় নিয়ে নিয়েছে! খুবই অল্প সময়ের মধ্যেই একটা মজবুত বন্ধন কাজ করছে দুজনের মাঝে ব্যাপারটা মোটেও খা...

বন্ধুত্ব

বন্ধু শব্দটা মূলত অনেক কমন!  শৈশব থেকেই এই শব্দের যাত্রা শুরু হলেও কৈশোরকাল থেকে বন্ধু শব্দটা উপলব্ধি করা যায়! আর সত্যি বলতে এয়ারটেলের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেই আসল বন্ধুত্ব এর মর্ম বুঝা যায়! :p কমবেশি বন্ধু কিন্তু সবারই থাকে।  তবে সব বন্ধু এক রকম না কিংবা একজাতের না. .. খুব অল্প কিছু বন্ধু থাকে, যারা একদমই অন্যরকম !! সবার থেকে ভিন্ন! অন্য বন্ধুরা যখন বৃষ্টি হইলে তোমার জন্য ছাতা নিয়ে দৌড়ায়ে আসবে ... "এই নে " কিংবা এক ছাতার নিচে থেকে একসাথে যাবে! অন্যরকম বন্ধুগুলা তখন উল্টা তোমার মাথার ছাতাটা কেড়ে নিয়ে বন্ধ করে দিয়ে বলবেঃ "ছাতা কি কামে লাগে ?? চল ভিজি !!" বন্ধুর পাল্লায় পড়ে বৃষ্টিতে ভিজে তোমার জ্বর হবে ...পরিণতি ভালো হবে না! তুমি যখন কাতর গলায় বলবা, তোমার জ্বর আসছে, শুধুমাত্র তোর কারণে!.. তখন ঐ অসাধারণ বন্ধু তোমারে বলবেঃ(হাসতে হাসতে) "তো ?? আজকে জ্বর হইছে, কালকে নিউমোনিয়া হবে !!" "কি বলতেছিস এগুলা ??তুই আমারে বোদোয়া দিতেসিস!!" "হুম ... আমি দোয়া করি তোর নিউমোনিয়া হোক !!" "কেন ? তাতে তোর কি লাভ?" "তোর নিউমোনিয়া হইলে...