Skip to main content

নিবেদিতা ( A Dream of Silence Love)

আন্টি হঠাৎ এভাবে ফোন দিয়ে বাসায় ডাকবে তা ভাবিনি! তবে আন্টিকে অনেক চিন্তিত মনে হচ্ছিল, হয়তো সিরিয়াস কোনো কথা বলবে! উম.... আবার ঐ কথাগুলো না তো আবার? না নাহ!  এটা হতেই পারে না!
নিজের সাথে এভাবে প্যাক প্যাক করতে করতে হঠাত তার ফোন এসে গেলো!  নামটা দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়!  মিষ্টি-মধুর এই নামে এক অপূর্ণ আনন্দ লুকিয়ে থাকে যা প্রকাশ্য নয়! আমি ফোনটা ধরলাম।
--- হ্যা বল!  কি হয়েছে?
--- তুই কই?
--- কেন তোর বাসায় আসতেসি!! কোনো আকাম করছিস নাকি?
--- আয়!  তাড়াতাড়ি আয়!
--- কিন্তু শোন.....
গেলো... কেটে গেলো!  যেই মেয়েটি সর্বদা হাসিখুশি থাকে আজ তাকেই চিন্তিত মনে হলো!  ব্যাপারটা সুবিধার না!
আমার এখনো মনে আছে, ও যেদিন আমাকে ওর বাবা-মা এর সাথে পরিচয় করে দিতে গিয়েছিল সেদিন ও ঠিকই এভাবে চিন্তায় ছিল আর আমার কথা না বলি! মনে হচ্ছিল ওর বাবা-মা ছেলে দেখতে এসেছে! কিন্তু নিজের মেয়ের বন্ধু দেখতে গিয়ে আন্টি-আঙ্কেল যা যা জিজ্ঞাসা করেছিল তা ভুলার মতো নয়!  আসলে ঐ দিন্টা আমি এতো ভয় পেয়েছিলাম যা আমি আমার ভর্তি পরীক্ষাতেও হইনি!
ঢাকা শহরের কোনো ভরসা নেই!  কখন যে মানুষ জ্যামে পরবে তার গ্যারাণ্টি নাই! বরং মানুষ বিয়ে করতে গিয়েও এই জ্যামের শিকার হয় তবে একদিকে লাভ আছে! জ্যামে বসে থেকে প্রেমিক-প্রেমিকারা ভালো সময় অতিবাহিত করে!  স্বল্প সময়ের বদলে তাদের সময় একটু বেড়ে যায়! ঠিক তেমনি ভাবেই হাজারো প্রেমের গল্প এই জ্যামেই শুরু হয় যেমনটা আমার হয়েছিল!
এখনকার মতো সেইদিনও আমি জ্যামে বসেছিলাম.........
.
.
.
.
.
ট্যাম্পুতে পাশের আংকেল এর চাপে প্রায় আমি ভর্তা হয়ে যাচ্ছিলাম! লাইফের প্রতি অতিষ্ট এবং পড়ালেখার কবলে ঘায়াল হওয়া আমি ট্যাম্পুতে বসে বাইরের দিকে তাকিয়ে নিজেকে নিয়ে ভাবছিলাম ♥
আর তখনই দেখা পেলাম তোমার ♥♥ আর ভাবনা-চিন্তা মুহুর্তে বদলে গেলো। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস তার ৩ সেকেন্ডেই ট্যাম্পু বিমানের গতি চলা শুরু করলো! শুধুমাত্র নেমপ্লেটটাতে চোখ পড়ছিল তাই নাম জানতেও বেশি দেরি হয়নি!  এইরকম ইউনিফর্ম থাকা উচিত যাতে নেমপ্লেট থাকবে এবং সহজেই নাম জানা যাবে!
"নিবেদিতা" নামটা অসম্ভব সুন্দর ♥
সেদিনই বুঝতে পারলাম ভালবাসা দেখে শুনে বুঝে হয় না!  ভালবাসার জন্য মন্ত্র "আবরা কা ডাবরা" 'ছুমন্তর  ছু' লাগে না!
ভালবাসা হঠাৎ হয়ে যায় কেবলমাত্র হঠাৎ! আস্তে করে আসে এবং সুন্দর এক স্পর্শ দিয়ে হারিয়ে যায় ♥
আমি আছি গল্প তোর সাথে ,
বুঝে নে ... ,
আমি আছি বৃষ্টি মাঝরাতে ,
ভিজে নে... ।
আমি আছি আয়না হয়ে তোর,
দেখে নে... ,
আমি আছি এক মুঠো আদর ,
মেখে নে ।
তোর কারনে শিখেছি গান আমি ,
তোর আলোতে করেছি স্নান ।
তোর পাশেতে লিখেছি নাম আমার ,
তোর শহরে রেখেছি পা ।
হতে পারে না ,
কোন গল্প তোকে ছাড়া ।
হতে পারে না ,
কোন ইচ্ছে তোকে ছাড়া ।
হতে পারে না ,
কোন গল্প তোকে ছাড়া ।
হতে পারে না ,
কোন শব্দ তোকে ছাড়া ।
দেখা হওয়াটা কোনো রোমান্টিক মুভি থেকে কম না কিন্তু তোমাকে খুজে পাওয়াটা অত্যন্ত কষ্টের ছিল! দিনগুলো ভুলার নয় যখন আমি তোমার নাম দিয়ে ফেবু সার্চ দিতাম মাঝে মাঝে নামের পাশে তোমার কলেজের নামও দিতাম!  ২ দিনের ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর ৩য় দিন হঠাত এক বন্ধুর ছবিতে তোমাকে দেখতে পেলাম!  ট্যাগ থেকে তোমার আইডি পাওয়ার পর এতটাই খুশি হয়েছিলাম যে আম্মু আমাকে দেখে অইদিন শঙ্কায় ছিল --পাগল হয়ে গেল নাকি তার ছেলে! জানি না তুমি  কিভাবে ৩ ঘণ্টার মধ্যে আমার রিকু একসেপ্ট করলে এবং শুরু হলো আমাদের কথা বলা ♥
নরমালই কথা শুরু হলেও খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমরা খুব কাছের বন্ধু হয়ে গিয়েছিলাম!  তুমি আমাকে ছাড়া কোথাও যেতে না এবং আমিও যেতাম না!  বন্ধুত্বটা ভালোই হয়েছিল আমাদের ♥ তবে ভেবেছিলাম তুমি মুসলিম কিন্তু না ধারণা ভুল আমার। তুমি হিন্দু! নিবেদিতা মজুমদার!  নাহ এতে কিছু হবে না!  কেননা আমাদের বন্ধুত্ব ধর্ম মানতো না!
আমার মনে আছে তুমি আমাকে গান শুনাতে আর আমি শুনাতাম কবিতা ♥
গান আর কবিতার মিশ্রণ আসলেও সুন্দর বলা যায়!  রাতের পর রাত কথা বলা আর সময় হলে দুজনে দেখা করে চা খাওয়া সময়গুলো আসলেও রঙিন ছিল!
একদিন তুমি আমাকে বলেছিল একটা বই লেখার জন্য!  আমি বলেছিলাম-- আচ্ছা!  তোর বিয়ের পর! হাহাহা!
হাসি তামাশায় কাটানো দিনগুলো বড়ই মধুর ছিল ♥
এরপর এইচএসসি এবং তার পর ভর্তি পরীক্ষায়!  সব হয়ে যাওয়ার পর দেখি দুই জনের একই ভার্সিটি!  সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল ♥ যদিও ভার্সিটিতে উঠার পর আমরা আরও বেশি ক্লোজ হয়ে যাই কেননা তখন কেবল আমরা আমরাই ছিলাম ♥
ক্লাস ফাকি দিয়ে আমাদের আড্ডা ঘুরে বেড়ানো আর রাতে আমাদের গান গাওয়া স্বভাব!  ভুলে যাবার মতো নয় ^_^
পূজাতে যেদিন তোমার সাথে আমি ঘুরতে গিয়েছিলাম সেদিন তোমাকে নীল জামদানিতে বড্ড সুন্দর ♥
আর
একদিন মনে আছে?  রাত ১.৩০ এ আমাকে ফোন দিয়ে বললা যে তোমার বাসার ছাদে আসতে!  আমি তো আসবোই না!  কসমের ভয় দিয়ে আমাকে আনা হয়েছিল!  জ্যোৎস্নাময় ওই রাতে তোমার জন্য হয়তো তেমন কিছু ছিল না কিন্তু তা আমার জীবনের সবচেয়ে মধুর মিষ্টি রাত ছিল!
গিটার হাতে নিয়ে যখন তোমার জন্য গান গাচ্ছিলাম তখন আমি চোখ ছিল তোমার চোখের দিকে ♥ শুধু তোমার চোখ দুটো
এখানে থমকে সময়
তবুও আবেগ ছুঁয়ে যায়
এই দূর সুদূর সীমানায়
গল্প বলে মেঘ ছায়ায়
শোনো
এখানে অন্ধকারে
তবু হাওয়া বারে বারে
এই গান আহ্বানে হারায়
তোমার চোখের তারায়
দেখো
বোকা চাঁদ মেঘ ঢেকে যায়
তবু ছবি এঁকে যায়
নিশুন্য হাওয়ায় হাওয়ায়
বোকা চাঁদ মেঘ ঢেকে যায়
তবু ছবি এঁকে যায়
নিশুন্য হাওয়ায় হাওয়ায়
বিবর বিশুষ্ক মায়ায়
নিজেকে নিজে খুঁজে পাই
শোনো
এখানে থমকে সময়
তবুও আবেগ ছুঁয়ে যায়
এই দূর সুদূর সীমানায়
গল্প বলে মেঘ ছায়ায়
শোনো...... ♥
.
.
.
.
-- স্যার চইলে আসছি! 
-- অও!  আচ্ছা তুমি বসো, আমি আসতেছি!
ঘরে ঢুকে দেখি আন্টি আর নিবেদিতা চুপ করে বসে আছে! আমাকে দেখে দুজনে দাঁড়িয়ে পড়লো!  এবং নিবেদিতা আমার হাত ধরে সোফার উপর বসালো এবং পাশে বসে বললো যে -- শোন!  তোকে আমি অনেকদিন ধরে একটা কথা বলতে চাচ্ছিলাম কিন্তু বলার সুযোগ পাচ্ছিলাম না! আমি মনে মনে ভাবলাম আমার কথাগুলই বলবে নাকি আবার!!
--- দোস্ত শোন মাইন্ড করিস না!  আমি তোর কাছ থেকে একটা কথা লুকিয়েছি!
-- কি কথা? কি হয়ছে একটু খুলে বল!
--- আসলে আমি একজনকে ভালবাসি!
--- ভালো তো!  কে সেই বালক?
--- তু...........ই চিনবি না!!
--- বল তো!
---- ফারহান রায়!
--- কি?? এটা কে?
--- ঢাকা ইউনিভার্সিটির আইবিএ তে পড়ে!  আমাদের চেয়ে এক ব্যাচ বড়!
--- আচ্ছা ভালো তো!  আমাকে এতদিন পর বললি যে!
--- আমি ভয়ে তোকে বলি নি! আর ভেবেছিলাম পরে বলবো কিন্ত আর হয় নি!  --- এখন আমার কি করার?
নিবেদিতার মা আমার কাছে এসে বললো --- বাবা, তুমি ওর সবচাইতে কাছের বন্ধু!  তাও তুমি যদি ওর বাবাকে রাজি করাতে!  কারণ ওর বাবা চায় ওর বিয়ে ডাক্তার এর সাথে হোক কিন্তু মেয়ে ভালোবেসেছে!  কিন্তু সাহায্য করো!!
-- আন্টি এসব বলা লাগে নাকি!  আমি বুঝাবো!
হঠাত বাসায় আংকেল আসলো!
-- কি বুঝানো হবে আমাকে? প্রত্যয় আমাকে কি বুঝাবে?
....
...
ধন্যবাদ তোকে!  তুই ছাড়া এই কাজ কেউ পারতো না!  আমি আজই ফারহানের সাথে আব্বুর দেখা করবো!  থ্যাংকস দোস্ত ♥
--- হইসে হইসে!  আর বলা লাগবে না! যা এখন বিকালের প্রস্তুতি নে!  আমি যাই! ♥
হ্যা, ঐদিন আমার চোখ দিয়ে পানি পরে নি!  আটকে রেখেছিলাম নিজেকে! কপাল আর ভাগ্য আমার কোনোটাই সেদিন ছিল না! 
সেই রাতে আমি কেবল ভেবেছি নিজেকে নিয়ে, তোমাকে নিয়ে এবং আমার স্বপ্ন গুলো নিয়ে! আমি কেন তোমাকে বলতে পারলাম না!  কেন? হয়তো আজ আবেগ বাস্তবতার কাছে হেরে গেলো!
পরেরদিন সকালে যখন তুমি আর ফারহান একসাথে এসেছিলে, ঠিক তখন তোমাদের দুজনকে আমার বেশ ভালো লাগছিল! মানিয়েছে দুজনকে!  যখন পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলে তখন আমার খুব জ্বলছিল!  আবার চলে গেলে দুজন!  কেমন জানি নিশব্দের আচ্ছন্ন ছিল চারিদিক! ♥
শূন্যতায় ভরপুর!
এখনো বিবর্ন স্বপ্ন আমার
নীরবে...... ভিজে যায় ধূসর রং এর আলো.....
শূন্যতায় ♥
বড় একা লাগে আমার..
কখনো কোনো অলসক্ষণে...
ছুটে চলা তবু কেনো শহরে......... ♥
আজ এই একাকীত্ব এর রাতে আমার পাশে কেবল আমার আকা তোমার সব ছবিগুলো ♥ এভাবেই গিটার হাতেই কেটে গেলো নিসঙ্গতার প্রথম রাত ♥
সময়গুলো খুব দ্রুত কেটে যাচ্ছিল এবং সাথে সাথে আমিও একা হয়ে যাচ্ছিলাম। তোমরা একসাথে ঘুরতে আর আমি তোমাকে দেখতাম শুধুমাত্র তোমাকে ♥
২ সপ্তাহের মধ্যে তোমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেলো! বিয়ের ঠিক আগে আঙ্কেল এবং আন্টি এবং তুমি এলে আমার বাসায়। এলোমেলো বাসায় আসার পর আমার নিজেরই লজ্জা লাগছিল! আব্বু-আম্মু ঢাকার বাইরে ছিল!  ঐদিন যখন তুমি বন্ধ ঘরের কথাটা বলেছিলে তখন আমি সত্যি ভয় পেয়েছিলাম!  এবং মিথ্যা বলে কোনোভাবে তোমাকে সরিয়ে এনেছিলাম!কেননা বদ্ধ ওই ঘর যে আমার কল্পনা ♥
নিবেদিতার বিয়ে ♥
---আজ তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে!
-থ্যাংকস দোস্ত!
--- আরেহ বোকা রে! থ্যাংকস কেন দিস?
আচ্ছা শুন!  এইটা তোর জন্য!
-- কি এইটা?
-- উম্ম আমি যাওয়ার পর দেখিস ^_^
-- আচ্ছা! 
-- রেডি হ! আমি নিচে যাই!  ভালো থাকিস!
(প্রত্যয় যাওয়ার পর নিবেদিতা উপহার খুলে দেখে তা একটা সিন্দুর এর বাক্স ছিল!)
এবং নিবেদিতা প্রত্যয়ের দিকে চেয়ে রইলো!
ছায়া তোর হয়ে আছি দেখ
পথে তোর চেয়ে আছি দেখ!
তোকে বল কি করে বোঝাই
দুজনে হয়ে আছি এক!
আমি নিচে নামতে নামতে হঠাত আমার বন্ধু  অর্ণব এর ফোন আসলো!
-- বল!  কি হইসে?
-- তুই ঠিক আছিস?
-- হ্যা কেনো?
-- আচ্ছা শুন!  তোর ফোনে একটা পিক দিসি!  এইটা কি নিবেদিতার জামাই?
-- ওয়েট!
.
-- হ্যা!  কেন কি হইসে?
-- এই ছেলের নাম ফারহান রায় না!  ফারহান রহমান!!
-- কি?  হ্যা!  আমি তোকে এইছেলের ফেইসবুক আইডি দিতেছি!
--- ---- ---- ----
---নিবেদিতা? ফারহান কি ?? মুসলিম??
নাহ জিজ্ঞাসা করতে পারিনি!  হেরে গিয়েছিলাম ঐদিন নিজের কাছে! নিবেদিতা আমাকেও বললো না! না আমি কিছু বলবো!
ওরা সাত পাক নিচ্ছে!  আর আমি ফুল দিচ্ছে!  দুজনকে ভালো লাগছে!  নিবেদিতাকে বরাবরেই মতো ভালো লাগছে!  হাতে চুড়ি, কপালে লাল টিপ আর কতো কি! বর্ণনা করে শেষ হবে না!
তবু আমি তোমার অপেক্ষায়
দেখবো নতুন দিনের আলো ।
বেঁচে থাকার আশ্রয় তুমি
তোমাকেই শুধু বাসি ভালো ।
দেয়ালে দেয়ালে
খেয়ালে খেয়ালে ,
হিসেবে বেহিসেবে
তোমাকেই খুঁজি ।
আড়ালে আড়ালে ,কোথায় হারালে
ফিরে তুমি আর
আসবেনা বুঝি ?
বলনা কেন তুমি বহুদূর ,
কেন আমি একা হৃদয়ে ভাঙচুর ।
জানো না তুমিহীনা  এ আমার ,
সপ্ন মেঘে ঢাকা নামে না রোদ্দুর ।
শেষ হয়ে গেলো তোমার বিয়ে!  শেষ হলো এক রুপকথার গল্পের ♥
আমি না আসলে আর কাউকে ভালোবাসতে পারলাম না!  একা হয়ে গেলাম! একগুঁয়ে অনেকটা!
সময় হলে আমি আমার কল্পনার জগতে গিয়ে তোমার সাথে গল্প করতাম ♥
আমাদের গল্পটা অনেকটা ভিন্ন ♥
জানো আজ তোমার বিয়ের ২.৫ বছর হয়ে গেলো!  তুমি হয়তো গল্পের বই এর কথা ভুলে গেস কিন্তু আমি ভুলে নি! কি লিখবো বলো..... ভেবেছিলাম তোমার আর আমার বিয়ের পর আমাদের গল্পটাই বই করে ফেলবো কিন্তু এখন তো গল্পটা তোমার আর আমার না!  গল্পটা শুধু আমারই হয়ে গেলো!  আর
হ্যা তোমার মেয়েটা অনেকটা তোমার মতো হয়েছে! চোখ আর নাক ঠিক তোমার মতো!দয়া করে আমার বিয়ে নিয়ে ভাববে না আমি আমার কল্পনার জগতে ভালো আছি!
আবার কালকে কথা হবে! 
ডায়েরি বন্ধ করে নিবেদিতা কেঁদে দিলো! এরপর সে দেখতো পেলো N এর একটি চাবির রিং! চোখ মুছে সে চাবি নিয়ে কৌতূহলবশত ঐ বন্ধ ঘরের তালা খুললো!
রুম খুলেই সে রুমের বাতি জ্বালানোর সাথে সাথে যা দেখতে পেলো তা দেখার জন্য সে কখনওই প্রস্তুত ছিল না!
সারা রুমের দেয়ালে তার ছবি টানানো!  আর রুমের মাঝে তার ছবির স্কেচ আর মাঝে একটা চেয়ার! 
নিবেদিতা সারা রুম ঘুরে দেখলো!  প্রতিটি ছবির নিচে একটা করে কবিতা লেখা আর.....
প্রত্যয় আসার শব্দ শুনে নিবেদিতা তাড়াতাড়ি রুম তালা মেরে ফেললো!
(নন্দিতাকে কোলে নিয়ে প্রত্যয় আসলো! নন্দিতা নিবেদিতার একমাত্র মেয়ে! মাত্র ৪ বছর বয়স!)
---আমার বন্দি ঘরে এতক্ষণ থেকে অনেক খারাপ লাগসে তোর বুঝছি!  মাফ কর!  তোর মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে ঘুরতে সময় যে কখন কই গেসে খেয়ালই করি নি!
আচ্ছা শুন!  নিচে ফারহান এসেছে! যা।
অপেক্ষা করছে তোর জন্য।
-- হ্যা!  যাচ্ছি!  ভালো থাকিস!
---আরেহ ভালোই আছি!  লন্ডনে গিয়ে ভুলে থাকিস না!
-- না রে!  ভুলবো না!  আসি!
.....
চলে গেলো নিবেদিতা! যেভাবে আমার জীবনে এসেছিল সেভাবেই চলে গেল!  ভালোই হয়েছে! দূর গিয়েছে কষ্ট কম হবে!
ভালো থেকো আমার প্রিয়তমা নিবেদিতা ♥
শেষ করে প্রত্যয় ডায়েরি অফ করে তালা খুলে আবার সেই রুমে যায়!
রুমের চেয়ারে বসে ছবিগুলো দেখতে থাকে ♥
আর গিটার নিয়ে........
আমি বলতে চাই কত কিছু
ছুটছি তাই তোমার পিছু
বলতে গিয়ে মাথা নিচু আমার
খুব সকালে দারিয়ে
হাত-টা রাখি বারিয়ে
বলব বলে চলে আসি আবার
থাকি অবাক তাকিয়ে
মিশে গন্ধে হারিয়ে তোমার
শুধু তোমার ভেতর মন
মন করে জ্বালাতন আমার
শোনো আমার এই গান
একি সুরে বাঁধা প্রান
খুজি আলো আঁধারে অজানা আহবন
নয়তো এখানে শেষ এইতো আছি বেশ
চল হই নিরুদ্দেশ ভুলে সব পিছুটান
তোমার অবাক টিপ
দেখে মুগ্ধ চারিদিক
দেখে মুগ্ধ এই আকাশ
মুগ্ধ ভোরের বাতাস
করি সেখানে খোঁজ
যেথা সপ্ন মেশে রোজ
যেথা তুমি আড়ালে হেসে দাড়ালে
যেন সপ্ন ছুটে যায়
মন তোমাকেই চায় আমার
শুধু তোমার ভেতর মন
মন করে জ্বালাতন আমার
শোনো আমার এই গান
এক সুরে বাঁধা প্রান
খুজি আলো আঁধারে অজানা আহবন
নয়তো এখানে শেষ এইতো আছি বেশ
চল হই নিরুদ্দেশ ভুলে সব পিছুটান
ভালো থেকো!
আর
আমিও ভালো আছি আমার কল্পনার সংসারে ♥
উৎসর্গঃ তোমাকে ♥
[বি.দ্র: সম্পূর্ণ ঘটনা ও চরিত্র কাল্পনিক।কারো সাথে মিলে গেলে তার জন্য লেখক দায়ী নয়।পোস্টারে যার ছবি ব্যবহার করা হয়েছে তার অনুমতির মাধ্যমেই ব্যবহার করা হয়েছে। ধন্যবাদ ]

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

একটি মধ্যবিত্ত ভালবাসার গল্প

কিছু গল্প সবসময় এক হয় না!  পার্থক্য, ভেদা-ভেদ সবকিছুতেই থাকে।ঠিক তেমনি ভালবাসার গল্পগুলোতেও কিছু মিল-অমিল পাওয়া যায়!আর আজকে ঠিক তেমনি অতি সাধারণ একটা গল্প তুলে ধরতে যাচ্ছি! 'মধ্যবিত্ত' শব্দটা হয়তো সকলেরই অনেক পরিচিত। মধ্যবিত্ত মানুষগুলো ধনী-গরীব হতে সম্পূর্ণ ভিন্ন।তাদের চিন্তা-ভাবনা,চলাফেরা এমনকি জীবনযাপনও ভিন্ন। আর মধ্যবিত্ত ভালবাসা এর মানে বুঝাই যাচ্ছে এর মধ্যেও কিছুটা ভিন্নতা আছে! ♥ কলেজ পড়ুয়া মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলের সাথে প্রেম করা বর্তমান যুগের মেয়ের জন্য তুলনামুলক প্যারাময়! কেননা এইসকল ছেলের থাকে না টাকা-পয়সা,মোটরসাইকেল আর কত কি!  কিন্তু মেয়েরা ভুলে যায়, অন্যদের মতো ঐ ছেলেদেরও সুন্দর একটা মন আছে, তারাও ভালবাসতে জানে!  টাকা-পয়সা বাইক এইসব শো অফ করাই কি ভালবাসা?? প্রেমিকার জন্মদিনে বড় অনুষ্ঠান করা, এ্যানিভার্সারি পালন করা আর আজাইরা টাকা খরচও কি ভালবাসা?? :/ ভালবাসা এমন হতে পারে না........ ১০০ টাকায় রিক্সা ভাড়া করে কিছুদূর ঘুরা! পাশাপাশি বসে একসাথে ফুচকা খাওয়া!♥ জন্মদিনে/অথবা অন্যকিছুতে টিফিনের এবং যাতায়াতের টাকা বাঁচিয়ে প্রিয় মানুষের জন্য ছোট্ট কিছু করা ...

তুমি, আমি আর সংসার (খুনসুটে অতীত)

  ২৩ শে জুন : শুভ জন্মদিন,ফায়াজ! :উম্ম, আপনার তাহলে মনে আছে?! ধন্যবাদ! : হ্যাঁ মনে কেনো থাকবে না!  স্বামীর জন্মদিন মনে রাখা একজন স্ত্রীর দায়িত্ব! শুনো টেবিলে ব্রেক-ফাস্ট রেডি করা আছে আর মা নানুর সাথে দেখা করতে গিয়েছে! বাসা তালা দিয়ে যেয়ো, আমাকে জলদি অফিসে যেতে হবে! : আচ্ছা একটু অপেক্ষা করেন, আমি নামিয়ে দিয়ে আসি! : নাহ নাহ! আপনি খেয়ে বের হয়েন এইটুকুই! এবং শুভ জন্মদিন!  বেশি প্রেসার নিয়েন না জন্মদিনে হাহাহাহা!  ( ফারিন অফিসের জন্য বের হলো) [বিয়ের ৩-৪ মাসের মধ্যে মেয়েটা আমাকে ভালোই চিনে ফেলেছে, যাক ভালো! তিনি ঠিক থাকলেই হলো! আর আজকের এই দিনে আর কি বা চেতে পারি! বছরের ঠিক মাঝে জন্মদিন, ব্যাপারটা ভালোই কিন্তু আজও কেউ কখনো..  উম্ম থাক! এই বুড়া বয়সে এসে এইসব ভাবা ঠিক না! ] বাথরুমে গিয়ে দেখি আয়নায় একটা স্টিকি নোট (শুভ জন্মদিন ডাক্তার সাহেব, হাসি মুখে ব্রাশ করে নাস্তার টেবিলে বসে যেয়েন, ভুলে যেয়েন না কিন্তু) [আমার বারবার নাস্তা করতে ভুলে যাওয়া এই ব্যাপারটা একবারে মাথায় নিয়ে নিয়েছে! খুবই অল্প সময়ের মধ্যেই একটা মজবুত বন্ধন কাজ করছে দুজনের মাঝে ব্যাপারটা মোটেও খা...

বন্ধুত্ব

বন্ধু শব্দটা মূলত অনেক কমন!  শৈশব থেকেই এই শব্দের যাত্রা শুরু হলেও কৈশোরকাল থেকে বন্ধু শব্দটা উপলব্ধি করা যায়! আর সত্যি বলতে এয়ারটেলের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেই আসল বন্ধুত্ব এর মর্ম বুঝা যায়! :p কমবেশি বন্ধু কিন্তু সবারই থাকে।  তবে সব বন্ধু এক রকম না কিংবা একজাতের না. .. খুব অল্প কিছু বন্ধু থাকে, যারা একদমই অন্যরকম !! সবার থেকে ভিন্ন! অন্য বন্ধুরা যখন বৃষ্টি হইলে তোমার জন্য ছাতা নিয়ে দৌড়ায়ে আসবে ... "এই নে " কিংবা এক ছাতার নিচে থেকে একসাথে যাবে! অন্যরকম বন্ধুগুলা তখন উল্টা তোমার মাথার ছাতাটা কেড়ে নিয়ে বন্ধ করে দিয়ে বলবেঃ "ছাতা কি কামে লাগে ?? চল ভিজি !!" বন্ধুর পাল্লায় পড়ে বৃষ্টিতে ভিজে তোমার জ্বর হবে ...পরিণতি ভালো হবে না! তুমি যখন কাতর গলায় বলবা, তোমার জ্বর আসছে, শুধুমাত্র তোর কারণে!.. তখন ঐ অসাধারণ বন্ধু তোমারে বলবেঃ(হাসতে হাসতে) "তো ?? আজকে জ্বর হইছে, কালকে নিউমোনিয়া হবে !!" "কি বলতেছিস এগুলা ??তুই আমারে বোদোয়া দিতেসিস!!" "হুম ... আমি দোয়া করি তোর নিউমোনিয়া হোক !!" "কেন ? তাতে তোর কি লাভ?" "তোর নিউমোনিয়া হইলে...