Skip to main content

The Propose


গানটা কিছুক্ষণ হয় শেষ করলাম !! আর এখনোই গাইতে হবে !! এতো গুলো মানুষের সামনের!! ভুল হলে মান-সম্মান সব শেষ !! আর স্যারও বলতেসে গান গাইতে !! মাত্র আর্ট ক্লাস্টা শেষ করে আসলাম !!

--প্রত্যয় শুরু করছো না কেনো ?
--জি স্যার, শুরু করছি !!

খন নিঝুম রাতে, সবকিছু চুপ,
নিষ্প্রাণ নগরীতে ঝিঁঝিরাও ঘুম..
আমি চাঁদের আলো হয়ে, তোমার কালো ঘরে
জেগে রই সারা নিশি...

এতটা ভালোবাসি, এতটা ভালো বাসি

যখন নিঝুম রাতে, সবকিছু চুপ,
নিষ্প্রাণ নগরীতে ঝিঁঝিরাও ঘুম..
আমি চাঁদের আলো হয়ে, তোমার কালো ঘরে
জেগে রই সারা নিশি...

এতটা ভালোবাসি, এতটা ভালো বাসি..

একি অপরূপ সুন্দর তার স্বপ্নের বর্ষা রাতে,
আমি ভিজে ভিজে মরি মিছে মগ্ন প্রভাতে..
দেখি ভীষণ অন্ধকার মাঝে আলো ছায়া, তার নূপুড় বাজে
আমি যে ভেবে ভেবে শিহরিত..

আমি সূর্যের আলো হয়ে, তোমার চলার পথে
ছায়া হয়ে তোমায় দেখি...

এতটা ভালোবাসি, এতটা ভালো বাসি..




---অনেক সুন্দর হয়েছে !! আরো সাধনা করলে আরো ভালো হবে !
-- ধন্যবাদ স্যার !!

ক্লাসের সবাই ভালো বলছিল !! প্রশংসায় ভরপুর আমি কিন্তু আর্ট ক্লাসে আসা নতুন মেয়েটি একবারো আমার দিকে ফিরে তাকালো না !!বুঝতে পারলাম না !! হয়তো আমার গান ভালো লাগে নি !! কিন্তু সবাই তো ভালো বললো ! আচ্ছা দেখা যাবে কালকে !! কালকে তো ভালো বলতেই হবে !!


পরের দিন .........

আজ সকাল থেকেই মেয়েটি চুপচাপ !! আজ এমন সুন্দর গান গাবো যে আমার দিকে তাকাতেই হবে এবং আমাকে ভালো বলতেই হবে !

আমার খোলা আকাশ, তোমার অপেক্ষায়
অনেক মেঘ বয়ে যায়, আসবে তুমি আবার
আমার মনের বারান্দায়, তোমার সময় কেটে যায়
আবার আসবে তুমি, আমার ভালো লাগার অনেক ইচ্ছেঘুড়ি।

আমি আকাশ পাঠাবো, তোমার মনের আকাশে
যেখানে গাইবে তুমি আনমনে
আমি আকাশ পাঠাবো, তোমার মনের আকাশে
খোলামাঠে গাইবে গান, বসন্তের বাতাসে।

আমার রঙিন বাতাস, তোমার অপেক্ষায়
অনেক স্মৃতি বয়ে যায়, আসবে তুমি আবার
আমার মনের বারান্দায়, তোমার আলো বয়ে যায়
আবার আসবে তুমি, আমার ভালো লাগার অনেক ইচ্ছেঘুড়ি।

আমি আকাশ পাঠাবো, তোমার মনের আকাশে
যেখানে গাইবে তুমি আনমনে
আমি আকাশ পাঠাবো, তোমার মনের আকাশে
খোলামাঠে গাইবে গান, বসন্তের বাতাসে..
.


সবাই আবারো আমার প্রশংসা এবং ভালো বলতে লাগলো !! কিন্তু মেয়েটি একবার ফিরেও তাকালো না !! সে ব্যস্ত তার আর্ট নিয়ে !! নিজের উপর খুব রাগ উঠলো এবং বসে থাকলাম এবং ভাবতে লাগলাম যে আমি কি এতো বাজে গান গাই !!

--- কি হয়েছে প্রত্যয় ?
-- নাহ ম্যাডাম তেমন কিছু না !! ঐ যে মেয়েটি আমার গান একটু শুনেও না !! এতো ভাব কেনো ??!!
-- হায়রে বোকা রে !! শুনলেও বুঝবে কিভাবে ??
-- মানে ?? বুঝলাম না !!
 -- ঈশিকা তো জাপান থেকে এসেছে !! ও ঠিকমতো বাংলা বুঝে না আর তোমার গান কি বুঝবে !

নিজের মাথায় নিজেই জোরে বারি দিলাম !! কি আর করার এখন কি জাপানিজ শিখবো !! সারারাত ভাবলাম এবং পরের দিন নেটে বসে হালকা হালকা শিখতে শুরু করলাম !!

১ মাস পর ...

যাই হোক আজকে সে আমার সাথে কথা বলবেই !!
তার ভাষায় আমি আজ গাইবো !! দেখা যাক ১ মাসের পরিশ্রম কাজে লাগে নাকি !!

どれくらい言いたいの?
逃げる
言って私を下ろす、私は弓を下ろす
非常に遅い
あなたの手を縛られたままにする
私はもう一度それを言うようになった
私たちは驚きを見て驚いています
失われた匂いが失われた
あなたの中のただの心
私を悩ましている私の心

私の曲を聞く
同様に、同調した遺伝子
光の光の中で未知のAhaban
そうでなければ、私はここにいる
すべての背中を忘れましょう

মানুষজন আমার দিকে তাকিয়ে রইলো ! ভাবতে লাগলো আমি হয়তো পাগল ।কিন্তু তখনও মেয়েটি একবারের জন্য হলেও আমার দিকে তাকালো না !!

নিজের উপর খুব রাগ উঠছিল ,মনে হচ্ছিল সব ভেঙ্গে ফেলি !
রাগ সামলাতে না পেরে ক্ষেপে আমি মেয়েটির দিকা যাচ্ছিল ঠিক তখন এক আন্টি এসে বললো --
-- বাবা তুমি তো অনেক ভালো গেয়েছো !!
--ধন্যবাদ! আন্টি তবে আপনি কি বুঝতে পেরেছেন ?
--হ্যা ! আমি কেনো বুঝবো না !! আমাদের ভাষা তো জাপানিজ!
-- আচ্ছা আন্টি তবে ......।?
-- আমি বুঝতে পেরেছি তুমি ঈশিকার কথা বলছো তাই না ?
--জি আন্টি !
-- ও আসলে এখন একটু অসুস্থ কেননা পরিবেশ পরিবর্তন।তাছারা ছোটবেলা থেকে ও একটু কানে কম শুনে এবং কথা কম বলে !! অপরিচিতদের সাথে তো আরও বলে না !
-- এখন আন্টি তাহলে ও কোন ভাষায় কথা বলে?
-- আপাতত বাংলাদেশে ও আমাদের সাথে সাংকেতিক ভাষায় কথা বলে !!
-- আচ্ছা আন্টি !!
-- বাবা গানটা কি তুমি ...............?
--- না নাহ !! আমি আসলে এমনিই চেষ্টা করছিলাম। আন্টি আপনি কি আমাকে এই সাংকেতিক ভাষার বইটা ধার দিবেন ??
-- হ্যা বাবা !! এই নাও !!


......
...

এরপর ৩ মাস পার হয়ে গেলো, আমি গানের ক্লাসে যাই না ২ মাস ! মাঝে কথা বলার চেষ্টা করেছি তবে পারি নি !! নিজের জন্য এবং ওর জন্য বড় কিছু একটা করবো বলে ভেবেছিলাম !!


১৪ই ফেব্রুয়ারী...
অতপর দিনটি এসে গেলো !! আজ ক্লাস রুমটা সুন্দর ভাবে সাজিয়ে ছিলাম!!
ক্লাসে ঢুকার সাথে সাথে ওকে একটা সিটে বসিয়ে ওর বিপরীতে আমি বসলাম গিটার নিয়ে !! <3

আমি বলতে চাই কত কিছু
ছুটছি তাই তোমার পিছু
বলতে গিয়ে মাথা নিচু আমার
খুব সকালে দারিয়ে
হাত-টা রাখি বারিয়ে
বলব বলে চলে আসি আবার
থাকি অবাক তাকিয়ে
মিশে গন্ধে হারিয়ে তোমার
শুধু তোমার ভেতর মন
মন করে জ্বালাতন আমার

শোনো আমার এই গান
একি সুরে বাঁধা প্রান
খুজি আলো আঁধারে অজানা আহবন
নয়তো এখানে শেষ এইতো আছি বেশ
চল হই নিরুদ্দেশ ভুলে সব পিছুটান


সাংকেতিক ভাষার মাধ্যমে গানটা গাইলাম এবং অকে কিছু ছবি দেখালাম আমার আকা ছবি !!
শেষে একটা পর্দা টান দিয়ে আমার আকা একটা ওর বড় ছবি ওকে দেখালাম !!

ঈশিকার চোখ দিয়ে পানি পড়ছিল এবং ঈশিকার মা বাইরে থেকে দেখছিল কেবলমাত্র !! আজকের দিনের জন্য আমি আন্টি আসতে বলেছিলাম বলে আন্টি এসেছিল। সাথে ছিল আমার গানের স্যার এবং আর্টের ম্যাডাম !
কিছুক্ষণ পর ও আমাকে বসতে বললো এবং ওর আর্টের খাতাটা আমাকে দিলো !!
আমি খাতা খুলার আগেই সে তার ভায়োলিন বের করে বাজানো শুরু করলো !!

আমি অবাক হয়ে গেলাম কেননা ও যেই গানের সুরগুলো বাজাচ্ছিল ঠিক সেই গানগুলোই আমি গেয়েছিলাম এতোদিন !!
আর আর্টের খাতার কেবল আমার ছবি আকা গিটার হাতে !!

আমি কি বলবো বুঝে পারছিলাম না !! চোখ বেয়ে পানি পরছিল এবং আমি বাকশক্তিহীন হয়ে গিয়েছিলাম।
এরপর সে আমাকে বললো ---
私はあなたを愛している
Watashi wa anata o aishite iru 

আস্তে আস্তে সে বাংলায় বললো -- আমি তোমাকে ভালবাসি <3

...............



কিছু গল্প এমন মিষ্টি-মধুর হতে পারে ! আবার কিছু গল্পের হয়তো শেষটা  এমন নাও হতে পারে !
কিন্তু জীবন প্রবাহমান।
আর এরকম ভালাবাসার মুহূর্তগুলোকে প্রত্যেক মানুষের অনুভব করা উচিত কেননা এমন সময় ভবিষ্যতে নাও আসতে পারে !!

বিদ্রঃ সম্পূর্ণ ঘটনা কাল্পনিক না !! কিছু অংশ সত্য ঘটনা অবলম্বনে রচিত। কারো সাথে মিলে গেলে লেখক অত্যন্ত দুখিত !

সবাইকে ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা !! <3 
 

Comments

Popular posts from this blog

একটি মধ্যবিত্ত ভালবাসার গল্প

কিছু গল্প সবসময় এক হয় না!  পার্থক্য, ভেদা-ভেদ সবকিছুতেই থাকে।ঠিক তেমনি ভালবাসার গল্পগুলোতেও কিছু মিল-অমিল পাওয়া যায়!আর আজকে ঠিক তেমনি অতি সাধারণ একটা গল্প তুলে ধরতে যাচ্ছি! 'মধ্যবিত্ত' শব্দটা হয়তো সকলেরই অনেক পরিচিত। মধ্যবিত্ত মানুষগুলো ধনী-গরীব হতে সম্পূর্ণ ভিন্ন।তাদের চিন্তা-ভাবনা,চলাফেরা এমনকি জীবনযাপনও ভিন্ন। আর মধ্যবিত্ত ভালবাসা এর মানে বুঝাই যাচ্ছে এর মধ্যেও কিছুটা ভিন্নতা আছে! ♥ কলেজ পড়ুয়া মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলের সাথে প্রেম করা বর্তমান যুগের মেয়ের জন্য তুলনামুলক প্যারাময়! কেননা এইসকল ছেলের থাকে না টাকা-পয়সা,মোটরসাইকেল আর কত কি!  কিন্তু মেয়েরা ভুলে যায়, অন্যদের মতো ঐ ছেলেদেরও সুন্দর একটা মন আছে, তারাও ভালবাসতে জানে!  টাকা-পয়সা বাইক এইসব শো অফ করাই কি ভালবাসা?? প্রেমিকার জন্মদিনে বড় অনুষ্ঠান করা, এ্যানিভার্সারি পালন করা আর আজাইরা টাকা খরচও কি ভালবাসা?? :/ ভালবাসা এমন হতে পারে না........ ১০০ টাকায় রিক্সা ভাড়া করে কিছুদূর ঘুরা! পাশাপাশি বসে একসাথে ফুচকা খাওয়া!♥ জন্মদিনে/অথবা অন্যকিছুতে টিফিনের এবং যাতায়াতের টাকা বাঁচিয়ে প্রিয় মানুষের জন্য ছোট্ট কিছু করা ...

বন্ধুত্ব

বন্ধু শব্দটা মূলত অনেক কমন!  শৈশব থেকেই এই শব্দের যাত্রা শুরু হলেও কৈশোরকাল থেকে বন্ধু শব্দটা উপলব্ধি করা যায়! আর সত্যি বলতে এয়ারটেলের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেই আসল বন্ধুত্ব এর মর্ম বুঝা যায়! :p কমবেশি বন্ধু কিন্তু সবারই থাকে।  তবে সব বন্ধু এক রকম না কিংবা একজাতের না. .. খুব অল্প কিছু বন্ধু থাকে, যারা একদমই অন্যরকম !! সবার থেকে ভিন্ন! অন্য বন্ধুরা যখন বৃষ্টি হইলে তোমার জন্য ছাতা নিয়ে দৌড়ায়ে আসবে ... "এই নে " কিংবা এক ছাতার নিচে থেকে একসাথে যাবে! অন্যরকম বন্ধুগুলা তখন উল্টা তোমার মাথার ছাতাটা কেড়ে নিয়ে বন্ধ করে দিয়ে বলবেঃ "ছাতা কি কামে লাগে ?? চল ভিজি !!" বন্ধুর পাল্লায় পড়ে বৃষ্টিতে ভিজে তোমার জ্বর হবে ...পরিণতি ভালো হবে না! তুমি যখন কাতর গলায় বলবা, তোমার জ্বর আসছে, শুধুমাত্র তোর কারণে!.. তখন ঐ অসাধারণ বন্ধু তোমারে বলবেঃ(হাসতে হাসতে) "তো ?? আজকে জ্বর হইছে, কালকে নিউমোনিয়া হবে !!" "কি বলতেছিস এগুলা ??তুই আমারে বোদোয়া দিতেসিস!!" "হুম ... আমি দোয়া করি তোর নিউমোনিয়া হোক !!" "কেন ? তাতে তোর কি লাভ?" "তোর নিউমোনিয়া হইলে...

তুমি, আমি আর সংসার (খুনসুটে অতীত)

  ২৩ শে জুন : শুভ জন্মদিন,ফায়াজ! :উম্ম, আপনার তাহলে মনে আছে?! ধন্যবাদ! : হ্যাঁ মনে কেনো থাকবে না!  স্বামীর জন্মদিন মনে রাখা একজন স্ত্রীর দায়িত্ব! শুনো টেবিলে ব্রেক-ফাস্ট রেডি করা আছে আর মা নানুর সাথে দেখা করতে গিয়েছে! বাসা তালা দিয়ে যেয়ো, আমাকে জলদি অফিসে যেতে হবে! : আচ্ছা একটু অপেক্ষা করেন, আমি নামিয়ে দিয়ে আসি! : নাহ নাহ! আপনি খেয়ে বের হয়েন এইটুকুই! এবং শুভ জন্মদিন!  বেশি প্রেসার নিয়েন না জন্মদিনে হাহাহাহা!  ( ফারিন অফিসের জন্য বের হলো) [বিয়ের ৩-৪ মাসের মধ্যে মেয়েটা আমাকে ভালোই চিনে ফেলেছে, যাক ভালো! তিনি ঠিক থাকলেই হলো! আর আজকের এই দিনে আর কি বা চেতে পারি! বছরের ঠিক মাঝে জন্মদিন, ব্যাপারটা ভালোই কিন্তু আজও কেউ কখনো..  উম্ম থাক! এই বুড়া বয়সে এসে এইসব ভাবা ঠিক না! ] বাথরুমে গিয়ে দেখি আয়নায় একটা স্টিকি নোট (শুভ জন্মদিন ডাক্তার সাহেব, হাসি মুখে ব্রাশ করে নাস্তার টেবিলে বসে যেয়েন, ভুলে যেয়েন না কিন্তু) [আমার বারবার নাস্তা করতে ভুলে যাওয়া এই ব্যাপারটা একবারে মাথায় নিয়ে নিয়েছে! খুবই অল্প সময়ের মধ্যেই একটা মজবুত বন্ধন কাজ করছে দুজনের মাঝে ব্যাপারটা মোটেও খা...