Skip to main content

বর্ণমালা Vনাম ALPHABET

টাইটেল দেখে ভাবছেন খুব মারামারি লাগিয়ে দিবো! কিন্তু এমন কিছুই নয়।খুব সাধারণ কিছু কথা বলবো আগে! শুরুতেই বলে নিচ্ছি যে আমি কাউকে ইংগিত করছি না এবং কাউকে নিয়ে লিখছি না।


শুরুতেই একটা গল্প বলি:- 
-- আরেহ ভাবি! কেমন আছেন? বহুদিন পর দেখা |
--হ্যা, এইতো আছি আর কি! আপনি? আসলেও অনেক দিনপর।তো ছেলেকে কোথায় ভর্তি করালেন? 
-- ভাবি ছেলেকে রেসিডেন্সিয়ালের ইংলিশ ভার্সনে নবম শ্রেণিতে ভর্তি করালাম! বাংলা ভার্সনে পড়িয়ে কিছু হবে কি? 
-- ঠিকই করেছেন ভাবি! আমিও আমার ছেলেকে ছোট থেকে মিডিয়ামে পড়িয়েছে! আমার ছেলে আজ ইংরেজিতে কথা বলে। সমাজে ভালোই লাগে ভাবি! 
-- জি ভাবি! আমিও ছেলেকে ইংরেজি মিডিয়ামে ভর্তি করবো! যাতে ভালো জায়গায় চাকরি পায়!! বর্তমানে ইংরেজির অনেক দাম!  


কি বুঝলেন? আর কিছু বলতে হবে কি? শুধু এইটুকুই বলবো যে আজ ২১ শে ফেব্রুয়ারি!

আসুন আরেকটা গল্প বলি! 

-- দোস্ত কতদিন পর! পুরোই হারিয়ে গিয়েছিস দেখি! 
-- নাহ রে! একটু ব্যস্ত ছিলাম রে ।
-- জানিস বন্ধু! আমার ছেলে বাইরের দেশে চাকুরী পেয়েছে!ভাগ্যিস ছেলেকে ইংরেজি মিডিয়ামে পড়িয়েছিলাম। তোর ছেলের কি খবর? কোথাও কি চাকুরী পেলো নাকি ! বাংলা ভার্সনে যে পড়িয়েছিলি যে !
-- এইতো একটা ব্যবসা করাবো। 
--বলেছিলাম ভার্সনে পড়াতে কিন্তু আমার কথা তো শুনলি না।

পরিস্থিতি এমন নাকি জানি না, তবে দোষ মানুষের না ! গোটা সমাজের !!
গত দুই-এক বছর ধরে দেখছি মুন নামে কিছু একটা হচ্ছে ! এই নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই তবে এর মাধ্যমে ভালোর চেয়ে খারাপই বেশি দেখা যাচ্ছে ! যারা করে তারাই জানে ! আগে আমাদের জন্য ছিল বির্তক! এর মধ্যে বারোয়ারী বির্তক ছিল ,সংসদীয় বির্তকও ছিল !
আর এখন ইংরেজীতে শুরু হয়েছে এক ধরণের ভান যেখানে ভালো কাজের চেয়ে আকাম বেশি হয় !!
দুখিত বেশি কিছু বলে ফেললে !

ভাষা বাংলা হয়েছে তবে আমাদের দেশে মান রয়েছে ইংরেজীতে ! 
কেউ যদি সুন্দর শুদ্ধ বাংলায় কথা বলে তাকে যত প্রশংসা করা হয় , তার চেয়ে বেশি প্রশংসা করা হয় তাকে যে কি না ইংরেজীতে জবাবে বলে -- I am fine and you?

হায়রে জাতি !!
যে ভাষার জন্য রক্ত দেওয়া হয়েছে তার মূল্য আজ এইখানে !!
ইহা সত্য যে ইংরেজি আর্ন্তজাতিক ভাষা ,তবে তাতে কি হয়েছে ??
বাঙালি হিসেবে কি ইংরেজি বলতে হবেই ?? আর বাংলা ভাষায় কথা বলা কি আসলেও ক্ষেত!!

আরেকটা ঘটনা বলি !! শুনুন !

একদা এক মহিলা তার প্রতিবেশীর মেয়েকে নিচে দেখতে পেয়ে ডাক দেয় এবং জিজ্ঞাসা করে যে 
-- কেমন আছো মামুনি ?
জবাবে মেয়েটি বলে -- I am quite better aunty and what about you?
মহিলা জবাব শুনে খুব খুশি হয় এবং তারা ইংরেজীতে প্রায় ৫ মিনিটের মতো কথোপকথন চালায়।

এরপর মহিলা বাসায় এসে তার সন্তানের উপর শুরু করে ঝড় !!

কি বুঝাতে কি সক্ষম হলাম ??

আমি নিজেও ইংরেজীতে তেমন একটা পারি না !! তাই ঐভাবে ফেবুতেও স্ট্যাটাস দিতে পারি না ! আর কিছু লিখলেও এক লাইনে হাজারো গ্রামার ভুল থাকে ! তাই বলে নিজেকে ছোট মনে করি না কখনো !! এমনকি আমার নিজের ইংরেজি ভার্সনের বন্ধুরাও আমাকে পচায় তবুও আমি কিছু মনে নেই না !! কারণ আমি জানি আমি পারি না !!
তবে আমি বাংলা যা পারি তারা হয়তো তা পারে না !!

কখনোই আমি ভাবি না যে ইংরেজীর গুরুতব কম !! কেননা উচ্চতর শিক্ষা থেকে শুরু করে যেকোনো জায়গায় ভালো করার জন্য ইংরেজীর দরকার অনেক তবে তাই বলে কি বাংলার গুরুত্ব কমিয়ে দিতে হবে ?? এমন কোনো কথা কোথাও লেখা নেই !!

এখন একটা শিশুকে ছোট বেলায় আগে বর্ণমালা না পড়িয়ে ALPHABET পড়ানো হয় !! আমি আমার নিজ আত্তীয়কে দেখেছি। আসলে চিন্তা-ভাবনাই বদলে ফেলেছে সবাই !!


আর আজ তো আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস !! ব্যানারে ,ফেস্টুনে, কন্সর্টেই দেখা যাবে শ্রদ্ধা ও সম্মান,আর কিছু মানুষকে দেখা যাবে শহীদ মিনারে ফুল দিতে !
মাঝে মাঝে মনে হয় যাই হোক মানুষ একদিন তো হলেও শ্রদ্ধা করে তবে আবার মাঝে মাঝে ঘৃণা হয় নিজের উপর এবং নিজের সমাজের উপর !
২১শে ফেব্রুয়ারি হলেই শহীদ মিনার বাকি দিনগুলোতে কি খবর নেওয়া হয় কি ? জায়গা পরিষ্কার রাখা হয় কি !!! রাস্তার ধারে মানুষগুলোকে আমরা ভিক্ষা দিতে নাক কুচকাই !! আর মৃত মানুষের জন্য হাজার হাজার টাকার ফুল দেওয়া হয় ! আমি বলছি না যে ফুল দিতে হবে না কেননা ফুল দিতে হবে সম্মানের জন্য তাই বলে হাজার হাজার টাকার !! যে জাতির মুখের ভাষার জন্য রক্ত দেওয়া হয়েছে আজ সেই জাতিই না খেয়ে মরে যাচ্ছে !! ফুল দিয়ে সম্মান না দেখিয়ে মন দিয়ে সম্মান-শ্রদ্ধা জানাতে শিখি!

আবার কথা কোথায় জানি নিয়ে গিয়েছি আমি !!
যেখানে ছিলাম !!

বাংলাতে যখন ডরিমন শুরু হয় তখন খুবই খুশি হয়েছিলাম আমি কেননা আমি নিজে দেখছিলাম শিশুরা হিন্দিতে দেখতে দেখতে হিন্দিতে কথা বলা  শুরু করেছিল! বাংলা আসাতে শিশুরা বাংলায় দেখা শুরু করলো এবং বাংলার ডাবিং টাও ছিল মার্জিত !
 আসলে আমরা নতুন কিছু করতে পারি না ! আগে একুশে টিভি অথবা বিটিভি তে অনেক সুন্দর সুন্দর কার্টুন দেখাতো যেমন আমার মনে আছে মন্টু মিয়ার অভিযানের কথা !! সেই রকম শিক্ষামূলক কার্টুন এখন আর দেখা যায় না ! বরং এখন শিশুরাও স্টার জলসা এবং জি বাংলা নিয়ে পড়ে থাকে !

যেখানে ছিলাম আর কি ।
বাংলার জন্য যে এতো কিছু তার ইতিহাসও হয়তো কেউ ঠিক্মতো জানে না। তা কেনো জানবে মানুষ কারন ২১শে ফেব্রুয়ারি তো বছরে একবার !!
আর সোশ্যাল মিডিয়া তো  কিছু দেওয়ার জন্য গুগল আছেই !! সবই এখন শোওফ!

আর আজকে অনেক মানুষ দেখবেন যে নানা জ্ঞানের কথা লিখবে এবং কিছু মানুষ হিন্দি এবং ইংরেজি গান নিয়ে অনেক কিছু লিখবে !! তবে দেখা যাবে যে তাদের নিজের ফোনের রিংটনই ইংরেজি গান !! 
প্রথম আলোর বিজ্ঞাপনের কথাটা এখনো মনে পড়ে যায় !!

বর্তমানের পরিস্থিতি বড়ই করুন !
এখন কোনো ছেলে যদি বলে -- আমি তোমাকে ভালবাসি !! তাহলে জবাবে মেয়ে বলবে ছেলেটি ক্ষেত !! কিছুই জানে না !
সেখানে ছেলেটি যদি বলতো -- I LOVE YOU তাহলে মেয়েটি বলতো ছেলেটি কত জোস !! স্টাইলিশ!! আরো কত কিছু !! এমনকি রিলেশনশিপও হয়ে যেতো !

তো কি আর বলবো !!
কিসের রবীন্দ্রনাথের কবিতা !!! কবিতা তা হলো ইলিয়টের !!
তবে কি বর্ণমালা হেরে যাবে ??

না হারতে দেবে না এই বাঙালি !! হতে পারে বাঙ্গালি অবুঝ তবে তার আছে অদ্যম ইচ্ছাশক্তি ও সাহস ! না জেনে থাকলে ইতিহাস দেখুন পড়ুন এবং জানুন !!

বাংলার জন্য মানুষ রক্ত দিয়েছে ?? ইংরেজির জন্য কি কেউ দিয়েছে ??
জাতিসংঘে বাঙ্গালির পিতা বাংলায় প্রথম কথা বলেছে !!
বাংলার আজ পৃথিবীর ৪র্থ ভাষা !!
দেশের বাইরেও মানুষ বাংলায় কথা বলছে ! এবং বাংলাকে প্রয়োগ করেছে ! 
MUN হয় তো কি হয়েছে ?? বাংলার বির্তক এখনো বিলীন হয়ে যায় নি !!


এইটা যুদ্ধ কিংবা কোনো বির্তক নয় !! এইটা কেবলমাত্র একটা অবুঝ বাঙ্গালির কিছু কথা !
ভুল কিছু বললে মাফ করে দিয়েন !!
আর হয়তো ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা দেওয়ার যোগ্যতা নিজের হয়নি ! তবে আমি মন থেকে তাদের শ্রদ্ধা এবং সম্মান দেওয়ার চেষ্টা করি !! কেননা তারা রক্ত না দিলে হয়তো আমি নিজে এতো সুন্দর করে লেখালেখি করতে পারতাম না এবং এতো সুন্দর করেও কথা বলতে পারতাম না ! নিজের সুন্দর নামও থাকতো না !!
সর্বশেষে বলবো যে বাংলা সম্মান দিতে শিখুন কেননা ইহা আমাদের রাষ্ট্রভাষা !!

Comments

Popular posts from this blog

একটি মধ্যবিত্ত ভালবাসার গল্প

কিছু গল্প সবসময় এক হয় না!  পার্থক্য, ভেদা-ভেদ সবকিছুতেই থাকে।ঠিক তেমনি ভালবাসার গল্পগুলোতেও কিছু মিল-অমিল পাওয়া যায়!আর আজকে ঠিক তেমনি অতি সাধারণ একটা গল্প তুলে ধরতে যাচ্ছি! 'মধ্যবিত্ত' শব্দটা হয়তো সকলেরই অনেক পরিচিত। মধ্যবিত্ত মানুষগুলো ধনী-গরীব হতে সম্পূর্ণ ভিন্ন।তাদের চিন্তা-ভাবনা,চলাফেরা এমনকি জীবনযাপনও ভিন্ন। আর মধ্যবিত্ত ভালবাসা এর মানে বুঝাই যাচ্ছে এর মধ্যেও কিছুটা ভিন্নতা আছে! ♥ কলেজ পড়ুয়া মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলের সাথে প্রেম করা বর্তমান যুগের মেয়ের জন্য তুলনামুলক প্যারাময়! কেননা এইসকল ছেলের থাকে না টাকা-পয়সা,মোটরসাইকেল আর কত কি!  কিন্তু মেয়েরা ভুলে যায়, অন্যদের মতো ঐ ছেলেদেরও সুন্দর একটা মন আছে, তারাও ভালবাসতে জানে!  টাকা-পয়সা বাইক এইসব শো অফ করাই কি ভালবাসা?? প্রেমিকার জন্মদিনে বড় অনুষ্ঠান করা, এ্যানিভার্সারি পালন করা আর আজাইরা টাকা খরচও কি ভালবাসা?? :/ ভালবাসা এমন হতে পারে না........ ১০০ টাকায় রিক্সা ভাড়া করে কিছুদূর ঘুরা! পাশাপাশি বসে একসাথে ফুচকা খাওয়া!♥ জন্মদিনে/অথবা অন্যকিছুতে টিফিনের এবং যাতায়াতের টাকা বাঁচিয়ে প্রিয় মানুষের জন্য ছোট্ট কিছু করা ...

তুমি, আমি আর সংসার (খুনসুটে অতীত)

  ২৩ শে জুন : শুভ জন্মদিন,ফায়াজ! :উম্ম, আপনার তাহলে মনে আছে?! ধন্যবাদ! : হ্যাঁ মনে কেনো থাকবে না!  স্বামীর জন্মদিন মনে রাখা একজন স্ত্রীর দায়িত্ব! শুনো টেবিলে ব্রেক-ফাস্ট রেডি করা আছে আর মা নানুর সাথে দেখা করতে গিয়েছে! বাসা তালা দিয়ে যেয়ো, আমাকে জলদি অফিসে যেতে হবে! : আচ্ছা একটু অপেক্ষা করেন, আমি নামিয়ে দিয়ে আসি! : নাহ নাহ! আপনি খেয়ে বের হয়েন এইটুকুই! এবং শুভ জন্মদিন!  বেশি প্রেসার নিয়েন না জন্মদিনে হাহাহাহা!  ( ফারিন অফিসের জন্য বের হলো) [বিয়ের ৩-৪ মাসের মধ্যে মেয়েটা আমাকে ভালোই চিনে ফেলেছে, যাক ভালো! তিনি ঠিক থাকলেই হলো! আর আজকের এই দিনে আর কি বা চেতে পারি! বছরের ঠিক মাঝে জন্মদিন, ব্যাপারটা ভালোই কিন্তু আজও কেউ কখনো..  উম্ম থাক! এই বুড়া বয়সে এসে এইসব ভাবা ঠিক না! ] বাথরুমে গিয়ে দেখি আয়নায় একটা স্টিকি নোট (শুভ জন্মদিন ডাক্তার সাহেব, হাসি মুখে ব্রাশ করে নাস্তার টেবিলে বসে যেয়েন, ভুলে যেয়েন না কিন্তু) [আমার বারবার নাস্তা করতে ভুলে যাওয়া এই ব্যাপারটা একবারে মাথায় নিয়ে নিয়েছে! খুবই অল্প সময়ের মধ্যেই একটা মজবুত বন্ধন কাজ করছে দুজনের মাঝে ব্যাপারটা মোটেও খা...

বন্ধুত্ব

বন্ধু শব্দটা মূলত অনেক কমন!  শৈশব থেকেই এই শব্দের যাত্রা শুরু হলেও কৈশোরকাল থেকে বন্ধু শব্দটা উপলব্ধি করা যায়! আর সত্যি বলতে এয়ারটেলের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেই আসল বন্ধুত্ব এর মর্ম বুঝা যায়! :p কমবেশি বন্ধু কিন্তু সবারই থাকে।  তবে সব বন্ধু এক রকম না কিংবা একজাতের না. .. খুব অল্প কিছু বন্ধু থাকে, যারা একদমই অন্যরকম !! সবার থেকে ভিন্ন! অন্য বন্ধুরা যখন বৃষ্টি হইলে তোমার জন্য ছাতা নিয়ে দৌড়ায়ে আসবে ... "এই নে " কিংবা এক ছাতার নিচে থেকে একসাথে যাবে! অন্যরকম বন্ধুগুলা তখন উল্টা তোমার মাথার ছাতাটা কেড়ে নিয়ে বন্ধ করে দিয়ে বলবেঃ "ছাতা কি কামে লাগে ?? চল ভিজি !!" বন্ধুর পাল্লায় পড়ে বৃষ্টিতে ভিজে তোমার জ্বর হবে ...পরিণতি ভালো হবে না! তুমি যখন কাতর গলায় বলবা, তোমার জ্বর আসছে, শুধুমাত্র তোর কারণে!.. তখন ঐ অসাধারণ বন্ধু তোমারে বলবেঃ(হাসতে হাসতে) "তো ?? আজকে জ্বর হইছে, কালকে নিউমোনিয়া হবে !!" "কি বলতেছিস এগুলা ??তুই আমারে বোদোয়া দিতেসিস!!" "হুম ... আমি দোয়া করি তোর নিউমোনিয়া হোক !!" "কেন ? তাতে তোর কি লাভ?" "তোর নিউমোনিয়া হইলে...