Skip to main content

সুপারহিরো - YOU ARE THE HERO OF YOUR OWN STORY


সুপারহিরো (YOU ARE THE HERO OF YOUR OWN STORY)


: রাহাত, গেইম তাড়াতাড়ি শেষ করো ! অনেকক্ষণ হয়ে গেছে!

: আম্মু,আরেকটু সময় দাও ! 4 vs 2 চলতেসে! লাস্ট ম্যাচ জিতেই আজকে পড়তে বসবো !

: তাড়াতাড়ি শেষ করে বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয় নিয়ে বসো!

:আচ্ছা আম্মু ! 


( দুর্দান্ত এক ম্যাচে রাহাত অবশেষে CHICKEN DINNER পায়,মানে সে জিতে যায় ! চিল্লা-চিল্লি,লাফালাফি করে রাহাত ফোনের গেইম অফ করে পড়ার টেবিলে বসে ।বের করে বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায় " আমাদের মুক্তিযুদ্ধ" , শুরু করে ২৫শে মার্চ কালোরাত )


রাহাতের বাবা: এইদিকে দেখো ,কোন হোটেলে যেন একদল জঙ্গি-বাহিনী হামলা করেছে! 


(সাংবাদিকঃ আমরা এখন ক-হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে আছি! ভিতরে এখন পর্যন্ত ২০-৩০ জন মানুষ আটক রয়েছে।জানতে পারিনি এখনো জঙ্গী বাহিনীরা কি চাচ্ছে ! ঘন্টা এখন ২ঘন্টার মতো হয়েছে !শুরুতে গুলির শব্দ পাওয়া গেলেও এখনো কোনো আহত কিংবা নিহতের খবর পাওয়া যায় নি ............)


( রাহাতের মা এই খবর দেখে অনেক ভয়ে আছে ,কেননা ঐ হোটেল থেকে তাদের বাসা বেশি দূরে নয়।এদিকে রাহতের ছোট বোন রুমে বসে পড়াশুনা করছে আর রাহাত তার বইয়ে মগ্ন হয়ে আছে !)

.

.

.

.

.

.

.

.

.

.

.

হঠাত করে রাহাতে বাসার নিচে জোরে কিসের জানি শব্দ এলো! রাহাতে মা ভয়ে কেপে উঠলো ! আওয়াজ আরো জোরে শুনা গেলো ! রাহাত লাফ দিয়ে উঠে তা বাবাকে এসে জড়িয়ে ধরলো !ঐদিকে রাহাতের বোনও রুম থেকে বেরিয়ে তার বাবার কাছে চলে এলো। এরপর আরো চিৎকার শুনা গেলো নিচ থেকে ,আর গুলির মতো আওয়াজ !

রাহাতের মা ভয়ে বলে উঠলো যে, আমাদের বাসায় হয়তো জঙ্গীরা হামলা করেছে।আজকের এই ২৫শে মার্চ যেন ১৯৭১ এর কালো রাতের মতো।

রাহাত হঠাত চিংকার করে বলে উঠলো - না ,মা ! আজকের এই রাত সেই কালোরাতের মতো নয় ।সে সময়ের মানুষজনের উপর হানাদার বাহিনীরা হামলা করেছিলো ঠিকই ,কিন্তু ভাবো যদি তারা প্রস্তত থাকতো তাহলে তারা ঠিকই মোকাবেলা করতো পারতো। মনে রাখবে তাদের এই হামলার জবাব কিন্তু বাঙ্গালীরা ঠিকই দিয়েছে !

আমরাও এর জবাব দিবো ,তোমাদের এই রাহাত তোমাদের রক্ষা করবে !

নিচ থেকে আরো আওয়াজ শুনা যাচ্ছে ! রাহাত তার বাবা-মায়ের রুমে গিয়ে মায়ের লাল ওড়না বের করে নিজের গলায় বেধে নেয় এবং নিজের গামছা মাথায় বেধে নেয় ! ঐদিকে রাহাতের বোন তার নিজের ভাইয়ের কথা শুনে রান্না-ঘর থেকে চামচ-চাকু,কাটা-চামচ,ডাল-ঘুটনি,খুন্তি এইসব বের করে নিয়ে আসে। রাহাত তার বাবাকে একটা মোটা জ্যাকেট পড়ায় এবং মাথায় মোটরসাইকেলের হেলমেট পড়িয়ে দেয়। এরপর রাহাত তার জ্যামিতি বক্সের কম্প্যাস বের করে পকেটে রাখে,সাথের আরো কলম-পেনসিল রাখে! 

ঐদিকের রাহাতের বোনের কাজ দেখে রাহাত আরো অবাক ! জবাবে রাহাতের বোন বলে- ভাইয়া আমিও FORTNITE খেলি কিন্তু ! রাহাতে বাবা সব ছুরি গুলো এক এক জায়গায় লুকায় এবং রাহাতে মা মরিচেরগুড়া,হলুদের গুড়া বোতলে রেডি করে রাখে ! 

এরই মধ্যে রাহাতের বাসায় জোরে ধাক্কা শুরু হয় ,নিচ থেকে তখনো চিৎকার শুনা যাচ্ছে সাথে মানুষের কান্না! দরজার ধাক্কা শুনে সবাই হালকা ভয় পায় ,কিন্তু রাহাতের চোখে একটুও ভয় নে ! সে বাসার সবাইকে বলে - এবারের এই মুক্তির সংগ্রাম মুক্তির জন্য আর আমার বঙ্গবন্ধুর জন্য! 

রাহাতের এই সাহসিকতা দেখে রাহাতে বাবা-মা নিজেদের মধ্যে আরো সাহস খুজে পেলো ! সবাই প্রস্তুত ,আর অপরদিকে দরজা ধাক্কা দিতে দিতে ভাঙার মতো অবস্থায় !

রাহাত দৌড় দিয়ে রান্না ঘরে গিয়ে পানির গরম পানির হাড়ি নিয়ে আসলো, ঠিক দরজার সামনে সেটা রেখে বসে পড়লো সবাই ,নিজেদের হাতের অস্ত্র নিয়ে প্রস্তুত !

দরজার অবস্থা প্রায়ই ভঙ্গুর ! এখুনি ভেঙ্গে যাবে !!

রাহাতের পরিবারের সবাই মহান আল্লাহ্‌ তায়ালার নাম নিলো ! এরই মধ্যে দরজা ভেঙ্গে গেলো এবং রাহাত চিংকার করে বললো- " THERE CAN BE ONLY ONE WINNER ,LET`s GO !! "


.

.

.

.

.

.

.

.


: রাহাত,এতো রাতে চিল্লা-চিল্লি করছো কেন ? তোমাকে না পড়তে বসতে বলেছে !

: সরি,আম্মু ! আমি পড়ছিলামই আর কি ! মাথায় কি যেন একটা চলে আসছিলো !!

রাহাত বই রেখে তার বাবার কাছে গিয়ে বসলো ! খবর দেখায় ব্যস্ত বাবাকে জোর করে রাহাত তার কল্পনার কথা শুনালো ,দূর থেকে মা বাবা-ছেলের কথা শুনছিলো ।

রাহাতের বাবা বললো যে, যুদ্ধ এতো সোজা নয় বরং তুমি যা ভেবেছে সেটা তাৎক্ষণিক ভাবে করা যেতে পারে কিন্তু সেই রাতে হানাদার বাহিনী নিরহ বাঙ্গালীর উপর ঝাপিয়ে পড়েছিলো !তারা তো কখনোই বুঝিনি যে তাদের উপর এমন আক্রমণ হবে  এতো বড়ভাবে ! বাকিটা তো বইয়ে পড়েছো তুমি !

: আম্মু ,এখন যদি যুদ্ধ হয় আমাকে কি তুমি যেতে দিবো ??

: হয়েছে অনেক যুদ্ধ কল্পনা আপনার ! প্রত্যেক মায়ের কাছেই তার সন্তান সুপারহিরো ! আমার ছেলে যদি মোকাবেলা করতে সক্ষম আর সাহসী হয় ,অবশ্যই আমি দিবো ! কিন্তু কোন মা-ই চাবে তার সন্তান হারাতে ? !

: মা,আমিই তোমাদের রক্ষা করবো এবং সবাইকে বাচাবো ! I WILL BE THE SUPERHERO OF MY COUNTRY

: এখন এইসব পরীক্ষার খাতায় লিখলে মনে হয় অনেক বেশি নম্বর পাবে ,মনে হচ্ছে !যাও এখন ঘুমাতে যাও,সকালে উঠে পড়তে বসো!



(টিভিতে ঃ পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক । জঙ্গীদের এখন আওতায় আনা হয়েছে ।আহত ও নিহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে । মৃতের সংখ্যা ০ )



.


.

.


মাঝরাতে রাহাত উঠে তার মায়ের ওড়না গলায় পেচিয়ে এবং গামছা মাথায় বেধে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখছে ... {ব্যাকগ্রাউন্ডে PUBG এর THEME}




(বিঃদ্রঃ - সম্পূর্ণ ঘটনাটায় কাল্পনিক ! কাউকে আঘাত করার জন্য এটা লেখা হয়নি , এর চরিত্র আমারই সৃষ্টি এবং পুরো কাল্পনিক আকারে লিখা হয়েছে গল্পটি ! )

Comments

Popular posts from this blog

একটি মধ্যবিত্ত ভালবাসার গল্প

কিছু গল্প সবসময় এক হয় না!  পার্থক্য, ভেদা-ভেদ সবকিছুতেই থাকে।ঠিক তেমনি ভালবাসার গল্পগুলোতেও কিছু মিল-অমিল পাওয়া যায়!আর আজকে ঠিক তেমনি অতি সাধারণ একটা গল্প তুলে ধরতে যাচ্ছি! 'মধ্যবিত্ত' শব্দটা হয়তো সকলেরই অনেক পরিচিত। মধ্যবিত্ত মানুষগুলো ধনী-গরীব হতে সম্পূর্ণ ভিন্ন।তাদের চিন্তা-ভাবনা,চলাফেরা এমনকি জীবনযাপনও ভিন্ন। আর মধ্যবিত্ত ভালবাসা এর মানে বুঝাই যাচ্ছে এর মধ্যেও কিছুটা ভিন্নতা আছে! ♥ কলেজ পড়ুয়া মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলের সাথে প্রেম করা বর্তমান যুগের মেয়ের জন্য তুলনামুলক প্যারাময়! কেননা এইসকল ছেলের থাকে না টাকা-পয়সা,মোটরসাইকেল আর কত কি!  কিন্তু মেয়েরা ভুলে যায়, অন্যদের মতো ঐ ছেলেদেরও সুন্দর একটা মন আছে, তারাও ভালবাসতে জানে!  টাকা-পয়সা বাইক এইসব শো অফ করাই কি ভালবাসা?? প্রেমিকার জন্মদিনে বড় অনুষ্ঠান করা, এ্যানিভার্সারি পালন করা আর আজাইরা টাকা খরচও কি ভালবাসা?? :/ ভালবাসা এমন হতে পারে না........ ১০০ টাকায় রিক্সা ভাড়া করে কিছুদূর ঘুরা! পাশাপাশি বসে একসাথে ফুচকা খাওয়া!♥ জন্মদিনে/অথবা অন্যকিছুতে টিফিনের এবং যাতায়াতের টাকা বাঁচিয়ে প্রিয় মানুষের জন্য ছোট্ট কিছু করা ...

তুমি, আমি আর সংসার (খুনসুটে অতীত)

  ২৩ শে জুন : শুভ জন্মদিন,ফায়াজ! :উম্ম, আপনার তাহলে মনে আছে?! ধন্যবাদ! : হ্যাঁ মনে কেনো থাকবে না!  স্বামীর জন্মদিন মনে রাখা একজন স্ত্রীর দায়িত্ব! শুনো টেবিলে ব্রেক-ফাস্ট রেডি করা আছে আর মা নানুর সাথে দেখা করতে গিয়েছে! বাসা তালা দিয়ে যেয়ো, আমাকে জলদি অফিসে যেতে হবে! : আচ্ছা একটু অপেক্ষা করেন, আমি নামিয়ে দিয়ে আসি! : নাহ নাহ! আপনি খেয়ে বের হয়েন এইটুকুই! এবং শুভ জন্মদিন!  বেশি প্রেসার নিয়েন না জন্মদিনে হাহাহাহা!  ( ফারিন অফিসের জন্য বের হলো) [বিয়ের ৩-৪ মাসের মধ্যে মেয়েটা আমাকে ভালোই চিনে ফেলেছে, যাক ভালো! তিনি ঠিক থাকলেই হলো! আর আজকের এই দিনে আর কি বা চেতে পারি! বছরের ঠিক মাঝে জন্মদিন, ব্যাপারটা ভালোই কিন্তু আজও কেউ কখনো..  উম্ম থাক! এই বুড়া বয়সে এসে এইসব ভাবা ঠিক না! ] বাথরুমে গিয়ে দেখি আয়নায় একটা স্টিকি নোট (শুভ জন্মদিন ডাক্তার সাহেব, হাসি মুখে ব্রাশ করে নাস্তার টেবিলে বসে যেয়েন, ভুলে যেয়েন না কিন্তু) [আমার বারবার নাস্তা করতে ভুলে যাওয়া এই ব্যাপারটা একবারে মাথায় নিয়ে নিয়েছে! খুবই অল্প সময়ের মধ্যেই একটা মজবুত বন্ধন কাজ করছে দুজনের মাঝে ব্যাপারটা মোটেও খা...

বন্ধুত্ব

বন্ধু শব্দটা মূলত অনেক কমন!  শৈশব থেকেই এই শব্দের যাত্রা শুরু হলেও কৈশোরকাল থেকে বন্ধু শব্দটা উপলব্ধি করা যায়! আর সত্যি বলতে এয়ারটেলের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেই আসল বন্ধুত্ব এর মর্ম বুঝা যায়! :p কমবেশি বন্ধু কিন্তু সবারই থাকে।  তবে সব বন্ধু এক রকম না কিংবা একজাতের না. .. খুব অল্প কিছু বন্ধু থাকে, যারা একদমই অন্যরকম !! সবার থেকে ভিন্ন! অন্য বন্ধুরা যখন বৃষ্টি হইলে তোমার জন্য ছাতা নিয়ে দৌড়ায়ে আসবে ... "এই নে " কিংবা এক ছাতার নিচে থেকে একসাথে যাবে! অন্যরকম বন্ধুগুলা তখন উল্টা তোমার মাথার ছাতাটা কেড়ে নিয়ে বন্ধ করে দিয়ে বলবেঃ "ছাতা কি কামে লাগে ?? চল ভিজি !!" বন্ধুর পাল্লায় পড়ে বৃষ্টিতে ভিজে তোমার জ্বর হবে ...পরিণতি ভালো হবে না! তুমি যখন কাতর গলায় বলবা, তোমার জ্বর আসছে, শুধুমাত্র তোর কারণে!.. তখন ঐ অসাধারণ বন্ধু তোমারে বলবেঃ(হাসতে হাসতে) "তো ?? আজকে জ্বর হইছে, কালকে নিউমোনিয়া হবে !!" "কি বলতেছিস এগুলা ??তুই আমারে বোদোয়া দিতেসিস!!" "হুম ... আমি দোয়া করি তোর নিউমোনিয়া হোক !!" "কেন ? তাতে তোর কি লাভ?" "তোর নিউমোনিয়া হইলে...