Skip to main content

100 Words Part-01 (Articular Facet)



100 Words  
(01-Articular Facet)


হোস্টেলের কাছে আসার পর, তার হাতগুলো যে ধীরে ধীরে কাপতে শুরু করেছে তা আমার বুঝতে একটু দেরি হয়নি। শেষ ৫/৬ দিন ধরে টানা পরীক্ষা দিতে দিতে আমরা দুইজনেই ক্লান্ত।  তাই আজ হালকা রিফ্রেশমেন্ট-এর জন্য দুজনে একটু ঘুরতে গিয়েছিলাম।তার চেহারা অনেকটা শুকিয়ে গিয়েছিলো, চোখ হালকা ভিতরের দিকে চলে গিয়েছিলো আর হাতে কলমের এলোমেলো দাগ। প্রেসার, চিন্তা আর একগাদা পড়াশুনা সবমিলিয়ে তার মনে যে একটা ভয় তৈরি হয়েছিলো সেটা আমি ২/৩ আগেই বুঝেছিলাম কিন্তু পরীক্ষা নামক গন্দিতে আমরা দুজনেই হারিয়ে গিয়েছিলাম তো বটেই,তার সাথে আমাদের ছোট্ট-মিষ্টি ভালোবাসা গাইটনের ভারে চাপা পড়ে গিয়েছিলো! ভিসেরা আর বোনস এর মাঝে ব্যস্ত আমরা যে কখন একে-অপরের সাথে কথা বলতেই ভুলে গিয়েছিলাম সেটা নিজেদের নজরে খুবই পরে এসেছে। হয়তো মাইক্রোস্কোপ দিয়েও আমাদের ভিতরের অনুভূতি দেখানো মুশকিল হয়ে যেতো এই সময়ে। কার্বহাইড্রেট,প্রোটিন, লিপিড,ভিটামিন আর পানি ঠিকই পড়েই যাচ্ছিলাম,কিন্তু নিজেরাই তা নিজেদের জন্য খেতে ভুলে যাচ্ছিলাম সেটাও আমাদের মাথায় কখনো আসে নি। আজ হয়তো কিছুক্ষণের জন্য আমরা একে-অপরের পাশে ছিলাম কিন্তু তার মন এখনো পড়ে রয়েছিলো টেবিলের সেই বইয়ে। আমি তার হাত শক্ত করে ধরে বললাম- "বেশি চিন্তা করো না,অভ্যাস হয়ে যাবে। আর ঠিকমতো একটু ঘুমিয়ে নিও। " ঠিক এই মুহূর্তে আমিই ঠিকই বুঝতে পারছিলাম যে আমার চেয়ে তার এখন তার পরিবারের দরকার ছিলো!  তবুও আমি নিজের চেষ্টায় একটু হলেও বুঝাতে হয়তো সক্ষম হয়েছিলাম।তার হাত কাপা আগের থেকে একটু কমেছে, সে হাত ছেড়ে আমাকে বললো- তুমিও নিজের খেয়াল রেখো,আগামীকাল ক্লাসে দেখা হচ্ছে। 

বিদায়ের এই মুহূর্ত পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন মূহুর্তের মধ্যে অন্যতম।শত না থাকা সত্তেও বিদায় ঠিকই নিতে হয়। সে তিন-চার পা আগানোর পর পিছনে ফিরে দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো, "ধন্যবাদ তোমাকে! আমার পাশে সবসময় থাকার জন্য"

আমি আসলে কি বলবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না,ঠিক এইভাবে মধ্যরাস্তায় প্রেমিকা জড়িয়ে ধরে কাদলে যেকোনো প্রেমিক তার ভাষা হারিয়ে ফেলবে! তবে সে কাপছিলো না, শক্ত হয়ে জড়িয়ে ধরেছিলো আমাকে কিছুক্ষণ। এরপর কিছু না বলে চোখ মুছতে মুছতে হোস্টেলের গেটের দিকে চলে গেলো।
আমি জানি না সে আমার মাঝের কিছু বুঝে উঠতে পেরেছিলো নাকি,তবে সে পাশে থাকলে আমার সবকিছুই সহজ লাগে,তার একটু হাসি আমার জন্য অনেক কিছু!  হয়তো আজ রাতে সে একটু হলেও শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়বে! এরপর আমিও এক আনমনে হোস্টেলের (বয়েজ হোস্টেল) দিকে আগাতে লাগলাম, ভাবলাম আজ রাত হয়তো হিস্টোলজি প্র‍্যাকটিক্যাল নিয়েই কাটাতে হবে.....

to be continued..... 

#100words (Articular Facet)

Comments

Popular posts from this blog

একটি মধ্যবিত্ত ভালবাসার গল্প

কিছু গল্প সবসময় এক হয় না!  পার্থক্য, ভেদা-ভেদ সবকিছুতেই থাকে।ঠিক তেমনি ভালবাসার গল্পগুলোতেও কিছু মিল-অমিল পাওয়া যায়!আর আজকে ঠিক তেমনি অতি সাধারণ একটা গল্প তুলে ধরতে যাচ্ছি! 'মধ্যবিত্ত' শব্দটা হয়তো সকলেরই অনেক পরিচিত। মধ্যবিত্ত মানুষগুলো ধনী-গরীব হতে সম্পূর্ণ ভিন্ন।তাদের চিন্তা-ভাবনা,চলাফেরা এমনকি জীবনযাপনও ভিন্ন। আর মধ্যবিত্ত ভালবাসা এর মানে বুঝাই যাচ্ছে এর মধ্যেও কিছুটা ভিন্নতা আছে! ♥ কলেজ পড়ুয়া মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলের সাথে প্রেম করা বর্তমান যুগের মেয়ের জন্য তুলনামুলক প্যারাময়! কেননা এইসকল ছেলের থাকে না টাকা-পয়সা,মোটরসাইকেল আর কত কি!  কিন্তু মেয়েরা ভুলে যায়, অন্যদের মতো ঐ ছেলেদেরও সুন্দর একটা মন আছে, তারাও ভালবাসতে জানে!  টাকা-পয়সা বাইক এইসব শো অফ করাই কি ভালবাসা?? প্রেমিকার জন্মদিনে বড় অনুষ্ঠান করা, এ্যানিভার্সারি পালন করা আর আজাইরা টাকা খরচও কি ভালবাসা?? :/ ভালবাসা এমন হতে পারে না........ ১০০ টাকায় রিক্সা ভাড়া করে কিছুদূর ঘুরা! পাশাপাশি বসে একসাথে ফুচকা খাওয়া!♥ জন্মদিনে/অথবা অন্যকিছুতে টিফিনের এবং যাতায়াতের টাকা বাঁচিয়ে প্রিয় মানুষের জন্য ছোট্ট কিছু করা ...

তুমি, আমি আর সংসার (খুনসুটে অতীত)

  ২৩ শে জুন : শুভ জন্মদিন,ফায়াজ! :উম্ম, আপনার তাহলে মনে আছে?! ধন্যবাদ! : হ্যাঁ মনে কেনো থাকবে না!  স্বামীর জন্মদিন মনে রাখা একজন স্ত্রীর দায়িত্ব! শুনো টেবিলে ব্রেক-ফাস্ট রেডি করা আছে আর মা নানুর সাথে দেখা করতে গিয়েছে! বাসা তালা দিয়ে যেয়ো, আমাকে জলদি অফিসে যেতে হবে! : আচ্ছা একটু অপেক্ষা করেন, আমি নামিয়ে দিয়ে আসি! : নাহ নাহ! আপনি খেয়ে বের হয়েন এইটুকুই! এবং শুভ জন্মদিন!  বেশি প্রেসার নিয়েন না জন্মদিনে হাহাহাহা!  ( ফারিন অফিসের জন্য বের হলো) [বিয়ের ৩-৪ মাসের মধ্যে মেয়েটা আমাকে ভালোই চিনে ফেলেছে, যাক ভালো! তিনি ঠিক থাকলেই হলো! আর আজকের এই দিনে আর কি বা চেতে পারি! বছরের ঠিক মাঝে জন্মদিন, ব্যাপারটা ভালোই কিন্তু আজও কেউ কখনো..  উম্ম থাক! এই বুড়া বয়সে এসে এইসব ভাবা ঠিক না! ] বাথরুমে গিয়ে দেখি আয়নায় একটা স্টিকি নোট (শুভ জন্মদিন ডাক্তার সাহেব, হাসি মুখে ব্রাশ করে নাস্তার টেবিলে বসে যেয়েন, ভুলে যেয়েন না কিন্তু) [আমার বারবার নাস্তা করতে ভুলে যাওয়া এই ব্যাপারটা একবারে মাথায় নিয়ে নিয়েছে! খুবই অল্প সময়ের মধ্যেই একটা মজবুত বন্ধন কাজ করছে দুজনের মাঝে ব্যাপারটা মোটেও খা...

বন্ধুত্ব

বন্ধু শব্দটা মূলত অনেক কমন!  শৈশব থেকেই এই শব্দের যাত্রা শুরু হলেও কৈশোরকাল থেকে বন্ধু শব্দটা উপলব্ধি করা যায়! আর সত্যি বলতে এয়ারটেলের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেই আসল বন্ধুত্ব এর মর্ম বুঝা যায়! :p কমবেশি বন্ধু কিন্তু সবারই থাকে।  তবে সব বন্ধু এক রকম না কিংবা একজাতের না. .. খুব অল্প কিছু বন্ধু থাকে, যারা একদমই অন্যরকম !! সবার থেকে ভিন্ন! অন্য বন্ধুরা যখন বৃষ্টি হইলে তোমার জন্য ছাতা নিয়ে দৌড়ায়ে আসবে ... "এই নে " কিংবা এক ছাতার নিচে থেকে একসাথে যাবে! অন্যরকম বন্ধুগুলা তখন উল্টা তোমার মাথার ছাতাটা কেড়ে নিয়ে বন্ধ করে দিয়ে বলবেঃ "ছাতা কি কামে লাগে ?? চল ভিজি !!" বন্ধুর পাল্লায় পড়ে বৃষ্টিতে ভিজে তোমার জ্বর হবে ...পরিণতি ভালো হবে না! তুমি যখন কাতর গলায় বলবা, তোমার জ্বর আসছে, শুধুমাত্র তোর কারণে!.. তখন ঐ অসাধারণ বন্ধু তোমারে বলবেঃ(হাসতে হাসতে) "তো ?? আজকে জ্বর হইছে, কালকে নিউমোনিয়া হবে !!" "কি বলতেছিস এগুলা ??তুই আমারে বোদোয়া দিতেসিস!!" "হুম ... আমি দোয়া করি তোর নিউমোনিয়া হোক !!" "কেন ? তাতে তোর কি লাভ?" "তোর নিউমোনিয়া হইলে...